নড়াইলে অবৈধ ক্যানেল কেটে দেওয়ায় জলাবদ্ধ জমিতে আমন চাষ
নড়াইলে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের হস্তক্ষেপে গত ১৫ জুলাই কেটে দেওয়া হয় অবৈধ ক্যানেল। এতে আড়াইশ একর জলাবদ্ধ জমিতে আমন ধান চাষ সম্ভব হয়েছে। ফলে জেলা সদরের কলোড়া ইউনিয়নের আগদিয়া এলাকার চার শতাধিক কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
গ্রামবাসী ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, আগদিয়া বিলে পাঁচ বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী আইয়ুব বিশ্বাস ও লিয়াকত গাজীসহ ২০ জনের মাছের ঘেরের কারণে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। এতে আমন চাষ বন্ধ হয়ে যায়। এ জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে ২০১৯ সাল থেকে আইয়ুবকে প্রতি বছর ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে তার জমির পাশ দিয়ে ক্যানেল কেটে দিলে কৃষকরা আমন চাষের সুযোগ পায়।
কিন্তু এ বছরের জুন মাসের শেষে রহস্যজনক কারণে আইয়ুব ক্যানেলটি বন্ধ করে দেয়। ফলে আবারও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পরে উপায় না পেয়ে গ্রামবাসীরা জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগে অভিযোগ দেয়।
আগদিয়া গ্রামের কৃষক শারীরিক প্রতিবন্ধী রফিকুল ইসলাম (৬৫) বলেন, ‘আড়াই একর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে এবার আমন বুনতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম না খেয়ে থাকতে হবে। অনেক রাত ঘুমাতে পারিনি। প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের হস্তক্ষেপে ক্যানেল কেটে দেওয়ায় আমন লাগাতে পেরেছি। আজ আমি খুব খুশি, মনটা ভরে গেছে।’
আগদিয়া দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, ক্যানেল কেটে দেওয়ায় তার ৫০ শতক জমিতে চাষের সুযোগ পেলেও এখনও ৯৬ শতকসহ গ্রামবাসীর কমপক্ষে একশ একর জমি পানির নিচে রয়েছে। লিয়াকতের ঘেরের পাশ দিয়ে ক্যানেল এবং কালভার্টের নিচে ইট ও ভরাট মাটি অপসারণ করলে বিলের সব জমিতে চাষ সম্ভব হতো।
কলোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্বাস সরদার বলেন, ‘স্থানীয় আইয়ুব বিশ্বাসের কারণে বিলে জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছিল না। পরে প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও গ্রামবাসীর সহায়তায় এটি সম্ভব হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (এউএনও) সাদিয়া ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে ঘের মালিক এবং ভুক্তভোগীদের নিয়ে আলোচনায় বসা হয়। পরে পুলিশ, কৃষি বিভাগ ও স্থানীয়দের সহায়তায় ক্যানেল কেটে ফসলের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।
নড়াইল কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘আগদিয়া বিলে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপে গত ১৫ জুলাই অবৈধ ক্যানেল অপসারণ করে আড়াইশ একর জমি রোপা আমন চাষের আওতায় আনা হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত চার হাজার মন ধান উৎপাদন হবে।’