নিজামীর আপিলের রায় ৬ জানুয়ারি
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আসামিপক্ষের পাল্টা যুক্তি শেষে আগামী ৬ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ রায়ের এ দিন ধার্য করেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। এজলাস থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া যায় না। ১৯৭১ সালে তিনি ২০ বছরের যুবক ছিলেন। এ কারণে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশ করে তিনি হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন বলে যে অভিযোগ আছে, তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি।’
অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের ক্ষেত্রে সরাসরি জড়িত থাকলেই যে শাস্তি হবে, এমন কোনো কথা নেই। উসকানিমূলক কথা বা আচরণের জন্যও শাস্তি হতে পারে।’
গত ২ ডিসেম্বর নিজামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন আইনজীবীরা। যুক্তিতর্ক শেষে তাঁরা নিজামীর বয়স এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে শাস্তি কমানোর আবেদন জানান।
২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধে মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এর বিরুদ্ধে আপিল করেন মতিউর রহমান নিজামী। এর পর একই বছর ২৩ নভেম্বর ১৬৮টি যুক্তি দেখিয়ে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন নিজামীর আইনজীবীরা।
এর আগে ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনাল। ২৮ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগ আমলে নেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উসকানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর মোট চারটি অভিযোগে তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।