তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা নেই, হবে আনন্দময় পাঠ
প্রাক-প্রাথমিক কিংবা প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না। পরীক্ষার পরিবর্তে শিখনকালীন মূল্যায়ন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করেন।
এ বিষয়ে ডা. দীপু মনি আরও বলেন, প্রাথমিকের স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে শতভাগ। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ আর পরীক্ষা হবে ৪০ শতাংশ। ৬০ শতাংশই ধারাবাহিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে হবে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা, শিল্পকলা (বিদ্যমান চারু ও কারুকলা) এগুলো শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে।
আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। আর ২০২৫ সালে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলামসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা আলাদা। নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। একজন শিক্ষার্থীর প্রাক-প্রাথমিকে ঢুকে মাধ্যমিকে স্তরে যাওয়া যেন খুব মসৃণ হয়, মাঝখানে যেন ছেদ না পড়ে সেই জন্য আমরা নতুন এ পদ্ধতি অবলম্বন করবো।
পুরো শিক্ষাক্রম হবে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক এবং আনন্দময় পড়াশোনা হবে- এমনটা উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, বিষয়বস্তু ও পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো হবে। মুখস্থ নির্ভরতার বিষয়টি যেন না থাকে, এর বদলে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শেখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খেলাখুলা ও অন্যান্য কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষেই যেন অধিকাংশ পাঠদান সম্পন্ন করতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের মতো সময় কাটাতে পারে। পড়াশোনার বাইরে খেলাখুলা বা অন্যান্য বিষয়ের সুযোগ কমে গেছে, এটা যেন না হয়। জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে বলে আমরা আশা করছি।