‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টারস দাবা’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে শুরু হয়েছে ‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টারস দাবা’ প্রতিযোগিতা। গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন ও সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিলের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফত। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম। এ ছাড়া ফেডারেশনের সদস্য এবং দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়েরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। বাংলাদেশে তিনটি বড় খেলার কথা বললে দাবার কথা বলতে হয়। আগামী বছর থেকে নতুন এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজতে স্কুল পর্যায়ে দাবা প্রতিযোগিতা শুরু করব। আমরা প্রথমবারের মতো জেলা পর্যায়ে দাবা লিগের আয়োজন করতে পেরেছি। আমরা এ বছর আরও তিন থেকে চারটি চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যবস্থা করেছি। অক্টোবরে আমরা শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আরও বড় পরিসরে একটি দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে গত বছরও আয়োজিত হয়েছিল ‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্ট’। ওই টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতি বেনজীর আহমেদ এবং সহ-সভাপতি নাফিজ সরাফাত প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে ঘোষণা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে এবারও আয়োজিত হয়েছে এই টুর্নামেন্ট।
টুর্নামেন্টে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ১২ জন গ্র্যান্ডমাস্টার, ১৬ জন আন্তর্জাতিক মাস্টার ও তিনজন নারী আন্তর্জাতিক মাস্টার এ টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন।
বিদেশি খেলোয়াড়েরা হলেন গ্র্যান্ডমাস্টার দীপ দাস গুপ্ত (ভারত), এহসান ঘাইম মাগামি (ইরান), মাসোউদ মোসাদেগপোর (ইরান), ভাদিম মালাখাটকো (বেলজিয়াম), অড্রে সুমেটস (ইউক্রেন), জুভারেভ আলেক্সান্ডার (ইউক্রেন) ও আলেক্সেউ কিসলিনসি (চেক রিপাবলিক)।
আন্তর্জাতিক ফিদে ও ক্যান্ডিডেট মাস্টারেরা হলেন শেখ মোহাম্মদ নুবাইর শাহ (ভারত), আবদিহাপার আসিলবেক (কিরগিজস্তান), মাহমুদ লোদি (পাকিস্তান), অরোক ঘোষ (ভারত), কোস্তোভ চ্যাটার্জি (ভারত), চক্রবর্তী রেড্ডি মেরেড্ডি (ভারত), মিত্রভা গুহ (ভারত), মোকশকুমার অমিতকুমার দোশি (ভারত), নিলাশ সাহা (ভারত), সামেদ সেকুয়ার সেটি (ভারত), সায়ন্তন দাস (ভারত), সোমক পালিত (ভারত), শ্রীজিত পাল (ভারত), শুভায়ন কুন্ডু (ভারত), সংকল্প গুপ্ত (ভারত), সংকেত চক্রবর্তী (ভারত), সৌরথ বিশ্বাস (ভারত), অরপিতা মুখার্জী (ডব্লিউআইএম ভারত), লিয়ানাগে রানিদু দিলশান (সিএম, শ্রীলঙ্কা), সাসিথ নিপুন পিউমান্থা (এফএম, শ্রীলঙ্কা) এবং রুপেশ জসওয়াল (এফএম, নেপাল)।
দেশের পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান, রিফাত বিন সাত্তার, মোল্লা আব্দুল্লাহ আল রাকিব, এনামুল হোসেন রাজীব এ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া তিন আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সফিয়ান শাকিল, মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান, দুই নারী আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদ, শারমীন সুলতানা শিরিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের খেলোয়াড়দের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় মোট ১৫ হাজার মার্কিন ডলার অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে। এর মধ্যে মূল পুরস্কার থাকবে ১৩ হাজার মার্কিন ডলার (চ্যাম্পিয়ন চার হাজার, রানারআপ দুই হাজার ৫০০, তৃতীয় এক হাজার ৫০০, চতুর্থ এক হাজার, পঞ্চম এক হাজার, ষষ্ঠ এক হাজার, সপ্তম এক হাজার, অষ্টম এক হাজার ডলার)।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য দুই হাজার মার্কিন ডলার (প্রথম ৭০০, দ্বিতীয় ৫০০, তৃতীয় ৪০০, চতুর্থ ২০০, পঞ্চম ২০০ ডলার) পুরস্কার দেওয়া হবে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর একটি হোটেলে এ প্রতিযোগিতার খেলা শুরু হয়।