ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের বিক্ষোভ-মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের বিক্ষোভ মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। গ্রাহকদের দাবি, লাঠিপেটায় ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে কয়েক জনকে আটক করা হয়। গ্রাহকেরা বিক্ষোভ মিছিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। মিছিলে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জানিয়েছেন। তবে তাঁর দাবি, ঘটনাস্থল থেকে কাওকে আটক করা হয়নি।
জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা। সেখানে ভুক্তভোগী কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যানারে তাঁরা মানববন্ধন করেন। এ সময় কমিটির আহ্বায়ক আফজাল হোসেন দাবি দাওয়া তুলে ধরেন।
এ বিক্ষোভ মিছিলে ই-অরেঞ্জ ও পুলিশ কর্মকর্তা সোহেলের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের অর্থ অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগীরা ই-অরেঞ্জ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সরকারি আমলা ও কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়াসহ দায়ের করা সব মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির দাবি জানান।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগীরা বলেন, এতো বড় প্রতারণার পরেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলে যে, তাদের কোনো দায় নেই, এটা হতে পারে না। ই-ক্যাবের মতো সংগঠনের কোনো ভূমিকা আমরা দেখিনি। ই-ক্যাব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলছি, আপনারা বলছেন বিষয়টি দেখবেন, কিন্তু এগুলো শুধু কাগজে-কলমে থাকলে হবে না। এর আগে ডেসটিনি ও যুবকের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার রায় থাকলেও ১০ বছরেও টাকা ফেরত পায়নি গ্রাহকেরা। তাই শুধু কাগজে-কলমে এসব বললেই হবে না, বাস্তবায়ন চাই।
মানবন্ধনের পর প্রেসক্লাব থেকে অর্ডার করা পণ্য ডেলিভারি অথবা বিনিয়োগ করা টাকা ফেরতের দাবিতে একটি মিছিল নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে যাচ্ছিলেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা। বিক্ষোভ মিছিলে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক সোহেল রানা ও ক্রিকেটার মাশরাফির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্সের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তাঁরা।
এক পর্যায়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন গ্রাহকেরা। পরে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব থেকে মৎস্য ভবন এলাকায় গেলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জে তাঁদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ তাঁদের কয়েক জনকে আটক করে।
যদিও আটকের বিষয়ে ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘গ্রাহকেরা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছিলেন। আমরা রাস্তা থেকে যানজট কমাতে প্রথমে তাঁদের সরে যেতে বলি। কিন্তু, তারা সরেননি। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করি। এখন সড়কে যানজট নেই। আর সেখান থেকে কাওকে আটক করা হয়নি।’
এ বিষয়ে ই-অরেঞ্জ ভুক্তভোগী কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করেছে। আমাদের ১০ জন এতে আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে কয়েক জনকে। আমরা নতুন করে কর্মসূচি দেব। নিরীহ মানুষের ওপর পুলিশ কেন হামলা করবে? আমরা তো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। আমরা আবারও শাহবাগে একত্রিত হব।’
এ ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।