বিস্কুট চুরির অপরাধে কিশোরকে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ
বিস্কুট চুরির মিথ্যে অপবাদ দিয়ে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশুটিকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। আর থানা পুলিশ বলছে, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহত ওই স্কুলছাত্র (১৩) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ভর্তি রয়েছে। সে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। সে স্থানীয় মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
আহত কিশোরের বাবার দাবি, ‘গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে আজিম নামের এক শিশু কিছু বিস্কুট নিয়ে স্থানীয়দের কাছে ধরা পড়ে। তখন ওই শিশুটি বিস্কুটগুলো গ্রামের বান্দেরপাড় (বাধেরপাড়) এলাকায় ইউসুফ ও ফারুক সিকদারের যৌথ দোকান থেকে নিয়েছে বলে জানায়। তখন তাকে বেঁধে রাখে এবং মারধরের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুরির সঙ্গে আমার ছেলে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করান দোকান মালিক। তবে আমার ছেলের সঙ্গে আজিমের ভালো সম্পর্ক থাকলেও সে চুরির সঙ্গে জড়িত নয়।’
তার বাবা আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর বাসা থেকে লোক পাঠিয়ে ডেকে নিয়ে যায় ইউসুফ সিকদার। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকেও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে চুরির বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আজিজুল হক আমাকে মুঠোফোনে জানালে আমি তাকে দুইদিন পরে বাড়িতে এসে বিচার করার আশ্বাস দেই। তবে এর আগেই শত্রুতার জের ধরে নুরুল আলম টগন নামের এক ব্যক্তি তাকে মারধর করে। তার দেওয়া চরের আঘাতে আমার ছেলের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে দোকানমালিক ইউসুফ সিকদার জানান, মাসখানেক ধরে দোকান থেকে বিস্কুক চুরি হচ্ছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় শিশু আজিমকে ১০ টাকা দামের মিল্ক কোম্পানির ছয় প্যাকেট বিস্কুটসহ স্থানীয়রাই আটক করে তাদের খবর দেয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ওই কিশোরের কথা জানায়। জিজ্ঞাসাবদের সময় আজিমের হাত আটকে ধরে তাকে রাখা হয়েছিল। বেঁধে রাখা হয়নি। আর ওই কিশোরকে মন্দ বলা হলেও মারধর করা হয়নি। তবে নুরুল আলমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করলে তখন সে থাপ্পর দিতে পারে কিন্তু নানাকে ডেকে যখন তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় তখন সে স্বাভাবিকও ছিল। ঘটনার পর মাদ্রাসাতেও গেছে, আর এখন শুনছি তার চোখে সমস্যার কথা।’
এদিকে, ইউপি সদস্য (মেম্বার) আজিজুল হক জানান, ঘটনাটির বিচার অভিভাবকরা করবে এমনটা চেয়ে তিনি ওই কিশোরের বাবাকে তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানান। তবে সে ঢাকায় থাকায় দুদিন পরে এসে বিচার করবেন বলে জানান। যদিও এর মধ্যে নুরুল আলম টগন ছেলেটিকে থাপ্পর দেয়। পরে জানতে পারি তখন সে নাকি চোখে আঘাত পেয়েছিল।
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনা এখনো থানা পুলিশকে অবগত করেননি। তবে যেহেতু শুনেছেন তাই বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন এবং তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।