রোহিঙ্গানেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড : অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গানেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় উখিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এই মামলা করেন। মামলা নম্বর ১২৬। উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দিন জানান, পুলিশ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে, এখন পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
উখিয়া থানা পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-এর ব্লক-ডি ৮-এ মুহিবুল্লাহর নিজ অফিসে পাঁচটি গুলি করে। এ সময় তিনটি গুলি তাঁর বুকে লাগে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যেরা তাঁকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে উখিয়া থানা পুলিশ রাত ১টার দিকে তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসেন।
ময়নাতদন্তের পর মুহিবুল্লাহর মরদেহ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে বিকেলেই কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে জানাজার পর তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় সেখানে হাজার হাজার রোহিঙ্গার ঢল নামে।
এদিকে, নিহত মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহ জানিয়েছিলেন, গত বুধবার রাতে এশার নামাজের পর মুহিবুল্লাহর অফিসে কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে আলাপচারিতাকালে হঠাৎ ১০-১২ জন রোহিঙ্গা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মুহিব্বুল্লাহকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় হাবিবুল্লাহ একটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বা শিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহর দাফন শেষে রাতে উখিয়া থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এমনকি অজ্ঞাত আসামিদের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, অজ্ঞাতনামা আসামি হলেই পুলিশের জন্য বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। তদন্ত করে, আলামত পর্যবেক্ষণ করে আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে হবে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে, অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে।
মুহিব্বুল্লাহ কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির-কেন্দ্রিক আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন।