আরিয়ান পরে জামিন পেলেও ‘জয়’ দেখছে এনসিবি
মুম্বাইয়ের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে শুনানির পর গতকাল বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ান খান জামিন না পাওয়ায় অবাক হয়েছেন অনেকে। যেহেতু মাদককাণ্ডে আরিয়ানের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন আদালত, তাই সবাই ভেবেছিলেন সহজেই জামিন পাবেন এ স্টার কিড।
কিন্তু শুনানিতে ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর (এনসিবি) প্রতিনিধি এএসজি অনিল সি সিং দাবি করেন, আরিয়ানের জামিনের বিষয়টি এই আদালত-সংশ্লিষ্ট নয়। আদালত এনসিবির এ দাবি মেনে নেন এবং এ মামলার বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে এনসিবির এক কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য বড় জয়, বিশেষ করে যখন কেউ কেউ আমাদের বদনাম করছে এবং একজন নির্দোষকে গ্রেপ্তার করার জন্য বিভাগকে দায়ী করছে। আদালত আমাদের মামলায় সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। এমনকি পরে যদি জামিনও হয়, আমরা আমাদের বক্তব্য প্রমাণ করেছি।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যখন এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন কোর্ট কোনও জামিন বাতিল করেন, তার মানে দাঁড়ায়, আমাদের মামলার সত্যতা আছে। সে কারণেই সব অভিযুক্তের জামিন আবেদন খারিজ হয়েছে। এটা অবশ্যই সমালোচনাকারীদের জন্য উপযুক্ত জবাব।’
খবরে প্রকাশ, আরিয়ান খান উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করবেন। যদি হাইকোর্ট এ স্টার কিডের জামিন মঞ্জুর করেন, তবে তাঁকে অন্তত আরও দুই রাত জেলে থাকতে হবে। আজ শনিবার ও কাল রোববার আদালত বন্ধ থাকায় উচ্চ আদালতে জামিন শুনানি হতে পারে সোমবার (১১ অক্টোবর)।
৮ অক্টোবর বিচারক আর এম নেরলিকার আরিয়ানসহ তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট এবং মুনমুন ধমেচার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
দুই দফা রিমান্ড শেষে ৭ অক্টোবর আরিয়ান খানকে ১৪ দিনের জন্য বিচারিক হেফাজতে পাঠান মুম্বাইয়ের আদালত। সেদিনই অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেন আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে।
৬ অক্টোবর মাদককাণ্ডে গ্রেপ্তার আরিয়ান খানসহ অভিযুক্তদের মুঠোফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য মুম্বাইয়ের গান্ধী নগরের একটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) দাবি করে, আরিয়ানের হোয়াটসঅ্যাপ আলাপচারিতায় ‘অবাক করার মতো এবং অপরাধমূলক’ প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের সঙ্গেও সংযোগের অভিযোগ তাদের।
৪ অক্টোবর আরিয়ান খানকে ফের জামিন না দিয়ে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন আদালত।
মাদককাণ্ডে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর ৩ অক্টোবর বিকেলে আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার দেখায় এনসিবি। সেদিন সন্ধ্যায় মেডিকেল চেকআপের পর আদালতে তোলা হলে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাঁকে এক দিনের হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এনডিপিএসের ৮সি, ২০, ২৭ ও ৩৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে। ২৩ বছর বয়সী আরিয়ান খানের পক্ষে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন মুম্বাইয়ের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে।
মুম্বাইয়ের উপকূলে একটি প্রমোদতরীতে চলমান মাদক পার্টি থেকে ২ অক্টোবর রাতে আরিয়ান খানসহ মোট আট জনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। যাত্রীর ছদ্মবেশে কর্ডেলিয়া নামে বিলাসবহুল ওই প্রমোদতরীতে চেপে বসেছিলেন এনসিবির গোয়েন্দারা। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এনসিবি।