সরকার পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে : মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘সরকার হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টি করে বিশ্ববাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, এই দেশ একটি সন্ত্রাসী দেশ। এদেশে বিদেশি সাহায্য দরকার। আসলেই কি তাই? না। আমার নেত্রী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এদেশে তিনবার রোজা এবং পূজা একসঙ্গে পালন করা হয়েছে। তখন তো কোনো দাঙ্গা হয়নি। একে-অপরের ধর্মকে আমরা মেনে নিয়েছি। আসল কথা হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হাসপাতালে, দুর্নীতি, লুটপাটসহ সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম আড়াল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সরকার এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস।
এ সময় মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘সামাজিক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ, বিশ্বজুড়ে সুনাম আছে। বাংলাদেশে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হলেও তারা কখনও সেটা অনুভব করেনি। আমার সঙ্গে বহু ক্লাসফ্রেন্ড ছিল, যারা এখন মারা গেছে। পূজা-পার্বন একসঙ্গে পালন করেছি। আমরা তো পূজা করতে পারি না, তবে তাদের উৎসাহ দিতাম।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমার এলাকায় ২৫ ভাগ হিন্দু ভোটার বসবাস করেন। কেউ বলতে পারবেন না যে, এই এলাকায় কোনোদিন দাঙ্গা হয়েছে। যখন বাবরি মসজিদ ভাঙে, আমি মির্জা আব্বাস নিজে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নির্দেশে তাঁদের পাহারা দিয়েছি।’
এ সময় মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘এই হাঙ্গামার অনেকগুলো কারণ আছে। যদি হিন্দুরা চলে যায়, সেই সম্পত্তি আওয়ামী লীগের লোকেরা দখল করবে। আর যদি তারা থেকে যায়, মিথ্যাচার করে সেই ভোটটা তারা পাবে। কিন্তু হিন্দু ভোটাররা সেটা করেন না। তা করলে হিন্দু ভাই-বোনদের ভোটে আমরা নির্বাচিত হতাম না।’
বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, ‘আমার নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন ক্ষমতায় থাকলে দেশে কোনো অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতো না। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, পেঁয়াজ, তেল, লবণ সবকিছুর দামে ঊর্ধ্বগতি। ভুতুরে পানির বিল, ভুতুরে গ্যাস বিল। এই সরকার বাংলাদেশে লুটপাটের একটা কারখানা খুলে বসেছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজ থাকলে এ লুটপাট বন্ধ হয়ে যেত।’
ঢাকার সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে বাকশালের পেট চিরে আওয়ামী লীগের জন্ম দিয়েছিল। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার লাইসেন্স দিয়েছিল বিএনপি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আপনাদের রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিল। অথচ সেই সুযোগটাকে অপব্যবহার করে আজকের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আপনারা কারাগারে আটকে রেখেছেন। তাঁকে চিকিৎসার সুযোগটাও দেওয়া হচ্ছে না।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়ে যায়, তারা বিশ্ববাসীকে বলতে পারবে, আমরা তো তাঁর সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু আমরাও বলতে পারব, আপনার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেননি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এস এস জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের পরিচালনায় মিলাদ মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল প্রমুখ।