জবির মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক সমিতি কমিটির পদত্যাগ দাবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেয়াদ উত্তীর্ণ শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করে এই কমিটির পদত্যাগ দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদলের সভাপতি ড. মো. আবুল হোসেন।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর দুই বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছে বর্তমান শিক্ষক সমিতির কমিটি, যা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি বলে গত ২০ অক্টোবর জবিশিস-২০২০ কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি ড. মো. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বরাবর এক চিঠির মাধ্যমে পদত্যাগ করেন মো. আবুল হোসেন।
আবুল হোসেন তাঁর পদত্যাগপত্রে বলেন, ‘জবিশিস-২০২০ সাধারণ শিক্ষকদের ম্যানডেট নিয়ে শিক্ষকদের কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। যার মেয়াদ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হলেও সাধারণ শিক্ষকদের মতামত উপেক্ষা করে এ সমিতি প্রায় এক বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছে, যা সমিতির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। সমিতির গঠনতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে, সাধারণ শিক্ষকদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং গঠনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখতে জবিশিস-২০২০ থেকে আমি পদত্যাগ করছি।’
পদত্যাগের বিষয়ে আবুল হোসেন বলেন, ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও এত দিন ধরে এ কমিটি কীভাবে থাকে। এটা তো সমিতির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি। আবার নির্বাচন কমিশন গঠনের পরও তারা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাই গঠনতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে ও গঠনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখতে আমি পদত্যাগ করেছি।’
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এজিএমের (সাধারণ সভা) মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি বহাল থাকবে। তবে এ সময় সমিতি সীমিত আকারে তাদের কার্যাবলি পরিচালনা করবে। কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা আয়োজন করতে পারবে। দায়িত্ব হস্তান্তর ব্যতীত কোনো সাধারণ সভার আয়োজন করা যাবে না। ড. আবুল হোসেন যখন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তখন শিক্ষক সমিতি কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচিত হওয়ার পরও পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন। গত শিক্ষক সমিতিও ইলেকশন কমিশন গঠনের পর পিকনিকের আয়োজন করেছিল।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্রের ধারা ৫-এর ৩ উপধারা থেকে কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদের বিষয়ে জানা যায়, ‘কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ হবে বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত বর্তমান পরিষদ দায়িত্ব পালন করবে।’
নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালিত হবে। তফসিল ঘোষণার কাজ গতকাল থেকে শুরু হয়েছে।’
ড. মো. আবুল হোসেন জবি শিক্ষক সমিতির ২০২০ সালের কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি জবি নীলদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত।
গত বুধবার আবুল হোসেন শিক্ষক সমিতি থেকে পদত্যাগের পর তাঁর সংগঠন নীলদলের পক্ষ থেকে শিক্ষক সমিতি-২০২০ এর কমিটির পদত্যাগ দাবি করা হয়।
এদিকে আবুল হোসেনের পদত্যাগ ও জবি নীলদলের বিবৃতির পরই শিক্ষক সমিতির নির্বাচন কমিশন গঠনের খবর আসে। গত ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী পরিষদের ২৩তম সভার সিদ্ধান্ত ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২২ আয়োজনের লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যা পরে শিক্ষক সমিতির অফিশিয়াল প্যাডে প্রকাশ করা হয় গত ১০ অক্টোবর।