‘আরিয়ানকে ফাঁসানো হয়েছে, চাকরি থাকবে না সমীরের’
বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের মহারাষ্ট্রের সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী নবাব মালিক।
শুধু তা-ই নয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর (এনসিবি) আঞ্চলিক পরিচালক (মুম্বাই প্রধান) সমীর ওয়াংখেড়ে চাকরি হারাবেন বলেও দাবি করেছেন নবাব মালিক।
বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের বরাতে ভারতের অন্যতম শীর্ষ সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর প্রকাশ করেছে। ‘আরিয়ান খানকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে’ দাবি করে নবাব মালিক বলেছেন, ‘সমীর ওয়াংখেড়ে চাকরি হারাবেন। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
এএনআইকে নবাব মালিক বলেন, ‘টুইটে জন্মসনদ ও নিকাহনামার যে ছবি দিয়েছি, তারা যদি তা মিথ্যা প্রমাণ করতে পারে, তবে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব, মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করব। আমি তাঁকে (সমীর ওয়াংখেড়ে) পদত্যাগ করতে বলছি না, কিন্তু আইন অনুযায়ী তিনি চাকরি হারাবেন।’
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন, গতকাল আরিয়ান খানের জামিনের শুনানি অসমাপ্ত ছিল। আজ বুধবার ফের শুনানি। আজ প্রথম বারের মতো এ মামলার দুই আসামি মনীশ রাজগড়িয়া ও অভিন সাহু জামিন পেয়েছেন।
অন্যদিকে, মামলার অন্যতম সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী প্রভাকর সেইলকে টানা চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বয়ান রেকর্ড করেছে ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি)। শাহরুখপুত্রের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে এনসিবির আঞ্চলিক পরিচালক সমীর ওয়াংখেড়ের বিপক্ষে যিতিনি ঘুষের অভিযোগ এনেছেন।
সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শাহরুখপুত্রের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে ২৫ কোটি রুপির অর্থ লেনদেন হয়েছে এবং এর মধ্যে ৮ কোটি রুপি পেয়েছেন সমীর ওয়াংখেড়ে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এনসিবির এ কর্মকর্তা। অন্যদিকে, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে প্রমাণ আছে বলে দাবি করেছেন প্রভাকর।
দিল্লি থেকে মুম্বাইয়ে ফিরেছেন সমীর ওয়াংখেড়ে এবং তিনি আরিয়ান খানের মামলার তদন্ত ফের শুরু করবেন। একটি তদন্তকারী দল দ্রুত মুম্বাইয়ে যাবে। তারা সমীরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবে।
টানা তিন বার বিশেষ এনডিপিএস আদালতে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানের জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর মুম্বাই হাইকোর্টে আজ আরিয়ানের জামিন শুনানির দিন নির্ধারিত হয়। আজও আরিয়ান খানের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে এনসিবি।
বোম্বে হাইকোর্টে আরিয়ানের পক্ষে জামিন শুনানিতে অংশ নেন ভারতের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল (এজিআই) মুকুল রোহাতজি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবনী সতীশ মানশিন্ডে ও অমিত দেশাই।
মাদককাণ্ডে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর ৩ অক্টোবর বিকেলে আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার দেখায় এনসিবি। আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এনডিপিএসের ৮সি, ২০বি, ২৭, ২৯ ও ৩৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
মুম্বাইয়ের উপকূলে একটি প্রমোদতরীতে চলমান মাদক পার্টি থেকে ২ অক্টোবর রাতে আরিয়ান খানসহ মোট আট জনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। যাত্রীর ছদ্মবেশে কর্ডেলিয়া নামে বিলাসবহুল ওই প্রমোদতরীতে চেপে বসেছিলেন এনসিবির গোয়েন্দারা। পরে মাদককাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ২০ জনের বেশি মানুষকে আটক করে এনসিবি।