পাবনায় নির্বাচনি সহিংসতায় দুজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫
পাবনার সুজানগর উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গোলাগুলি এবং নির্বাচনি অফিস কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধসহ মোট পাঁচ জন আহত হয়েছেন। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুজানগর উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হাটখালী ইউনিয়নের বারভাগিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন—হাটখালী ইউনিয়নের বারভাগিয়া গ্রামের আজাহার আলী মোল্লা (৬৫) এবং আজগর আলী মোল্লা (৬০)।
এ ছাড়া গুরুতর আহত খাইরুল ইসলাম (৪০), রেহেনা খাতুন (৩৫) এবং জুবায়ের হোসেনকে (৩০) পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ খান বলেন, ‘গত ২৬ অক্টোবর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকেই হাটখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন মারমুখী আচরণ শুরু করেন। তারই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার ইউনিয়ন এলাকার বারভাগিয়া গ্রামে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসে হামলা ভাঙচুর চালায়। রাতের আঁধারে অতর্কিতে সাধারণ লোকজনের ওপর গুলি করলে আমাদের প্রায় ছয়-সাত জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে পাঁচ জনকে পাবনায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
‘পরে আমাদের লোকজন তাদের ধাওয়া দিলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা একই ইউনিয়নের নুরুউদ্দিনপুর বাজারে একটি নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করে চলে যায়’, যোগ করেন ফিরোজ আহমেদ খান।
অন্যদিকে, নৌকার প্রার্থী আব্দুর রউফ সহিংসতার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা হাটখালী ইউনিয়নে ঘটেনি। আমার জনপ্রিয়তা ও নিশ্চিত বিজয় দেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
আব্দুর রউফ বলেন, ‘মূলত বারভাগিয়া গ্রামের বিশ্বাস ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। এই ঝামেলাকে নির্বাচনি সহিংসতা দেখানোর অপচেষ্টা করে নির্বাচনি পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আনারস প্রতীক ও বিদ্রোহী প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ খান।
ছেলে-মেয়ের প্রেম ঘটিত বিষয় হলে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করবেন কেন বলেও জানান তিনি।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, এটি নির্বাচন কেন্দ্রীক সহিংসতা নয়। হাটখালী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ খানের দুই গ্রæপের ঝামেলা হয়েছে। বারভাগিয়া গ্রামের দুটি পরিবারের ছেলে ও মেয়ের সম্পর্কের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে ওই এলাকায়, পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ঘটনার পরপরই পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, হাটখালী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আব্দুর রউফ ছাড়াও উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ খান আনারস প্রতীক ও সুজানগর উপজেলা আ. লীগের সদস্য আনছার আলী ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন। আগামী ১১ নভেম্বর ২য় দফায় জেলার সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।