আইনমন্ত্রীর বক্তব্য কোন আইনে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আইনমন্ত্রী বিএনপির নেতাদের কষ্ট দিয়ে আনন্দ পান। এই কারণে যত ধরনের অমানবিক আইনের কথা তুলে বিএনপির নেতাদের কষ্ট দিয়ে তিনি শেখ হাসিনার কাছে সাধু সাজতে চান, ভালো সাজতে চান, সন্ন্যাসী সাজতে চান।’
আজ বুধবার দুপুরে এক দোয়া মাহফিলে বিএনপিনেতা এসব কথা বলেন। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে পরিবারের করা আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, ‘গতকাল আইনমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে আবার কারাগারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। কোন আইনে আছে? তাহলে শেখ হাসিনা (তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা) কি করে গিয়েছিলেন মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের আমলে? আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জলিল (আব্দুল জলিল) সাহেব কি করে সিঙ্গাপুর চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন? সেইদিন কোন আইনে গিয়েছিলেন তারা? আপনি তো তখন মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সময়ে দুদকের প্রধান আইনজীবী।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এর আগে দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আ স ম আবদুর রব তখন কারাগারে সেই অবস্থায় তিনি চিকিৎসার জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। অসংখ্য দৃষ্টান্ত আছে, অসংখ্য উদাহরণ আছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার যেকোনো মুহূর্তে এই ধরনের অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অনুমতি দিতে পারে। আমরা এখনো আহ্বান জানাচ্ছি, দেশনেত্রীকে তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিন। আমরা বলতে চাই, আপনারা ভুলে যাবেন না, এদেশের কোটি কোটি মানুষ, আবালবৃদ্ধবনিতা তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত হাটে-ঘাটে-মাঠে, জনপদে-জনপদে জাতীয়তাবাদের মানুষ গিজগিজ করছে। লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত দিয়ে আপনারা যদি অমানবিক কোনো পথের দিকে এগিয়ে যান, কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে এসে আপনাদের এই নির্দয়-নির্মমতার বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব দেবে। এই জবাব থেকে আপনারা কেউ রেহাই পাবেন না।’
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে প্রতিনিয়ত দেশের মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে কিন্তু সরকার নূন্যতম একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছে না। পার্শ্ববর্তী দেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, সীমান্তে অবৈধ কর্মকাণ্ড হলে কী করা হবে। বাংলাদেশিদের যাদেরকে গুলি করা হয়েছে তারা কি পাল্টা কোনো গুলি করেছে? বাংলাদেশেই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন তাহলে এদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব এখন কত দুর্বল যে অন্য দেশের একজন রাষ্ট্রদূত এই কথা বলতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে জাসাসের আহ্বায় হেলাল খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকনের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির আবদুস সালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম, ওলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, জাবেদ আহমেদ কিসলু, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, খালেদুজ্জামান জুয়েল, ফরহাদ হোসেন নিয়ন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।