ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গণঅধিকার নেতাকর্মীদের পেটাল ছাত্রলীগ
টাঙ্গাইলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে ফুল দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। আজ বুধবার ভোরের দিকে ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলার সন্তোষে এ ঘটনা ঘটে।
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা পাঠান আজাদ জানান, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে একটি দল ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে যায়। এ সময় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। হামলার কারণে তারা ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারেনি।
পাল্টা অভিযোগ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ ভিপি নুরের অনুসারীরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে সাত থেকে আটজন আহত হয়। দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পুলিশ রেজা কিবরিয়া ও ভিপি নুরুল হক নুরের সমর্থকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।
আজ সকাল থেকে ভাসানীর মাজারে মানুষের ঢল নামে। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় ভাসানীর মাজার। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মানুষ স্মরণ করে এই মহান নেতাকে। অসংখ্য ভক্তদের কণ্ঠে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মজলুম জননেতার সমাধিস্থল।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. এ আর এম সোলাইমান। এরপর ভাসানীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু, ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নেতৃত্বে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ভাসানী আদর্শ অনুশীলন পরিষদ, ভাসানী স্মৃতি পরিষদ, ন্যাপ ভাসানী, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কদিন আগে থেকেই ভাসানীর ভক্তরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্তোষে আসতে শুরু করেন।
১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চিরনিন্দ্রায় শায়িত করা হয়। ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তাঁর জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে।