রিভিউয়ের আবেদন করবেন মেয়র জাহাঙ্গীর
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তকে রিভিউ করার আবেদন করব।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটূক্তি করার দায়ে দলীয় পদ হারানোর পর আজ শনিবার সকালে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা বলেন মেয়র।
এ সময় মেয়র অভিযোগ করেন, ‘ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকে একটি প্রতিপক্ষ তার নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমার ঘরের ভিতরে বসে তিন ঘণ্টার আলাপচারিতাকে খণ্ড খণ্ড করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি তবুও প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা মাথা পেতে নিব।’
মেয়র তাঁর আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি, অপরাধ করিনি। আমি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ চাই না, বাকি জীবন আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সদস্য ও সমর্থক হয়ে থাকতে চাই।’
বক্তব্য দেওয়ার সময় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম কান্নায় ভেঙে পড়লে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরাও আবেগতাড়িত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় এখানে একটি হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এদিকে, জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে দলের সিদ্ধান্তকে তার অনুসারীরা মেনে নিতে পারছেন না। তারাও নেত্রীর কাছে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানায়।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি কটূক্তির কারণে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। ওই ভিডিওতে মেয়র জাহাঙ্গীরকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করতে শোনা গেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এরপর গত ৩ অক্টোবর দলীয় স্বার্থ-পরিপন্থি কর্মকাণ্ড এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে কারণ দর্শাতে নোটিশ দেয় আওয়ামী লীগ। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব চাওয়া হয়।
জবাবে সন্তোষ্ট না হওয়ায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।