জেমস ও মাইলসের মামলায় বাংলালিংক কর্মকর্তাদের জামিন
১৪ বছর ধরে অনুমতি ছাড়া আটটি গান ওয়েলকাম টিউন হিসেবে ব্যবহারের কপিরাইট আইনের মামলায় জামিন পেয়েছেন বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এরিক অ্যাসসহ চার কর্মকর্তা।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এরিক অ্যাসসহ চারজন পৃথক দুই মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
অন্য তিনজন হলেন- প্রতিষ্ঠানটির চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার এম নুরুল আলম, চিফ করপোরেট রেগুলেটরি অফিসার তৈমুর রহমান এবং হেড অব ভ্যাস অনিক ধর।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে জেমস ও মাইলস বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এরপরে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করেন।
জনপ্রিয় গায়ক জেমস এদেশের ব্যান্ড মিউজিকের উজ্জ্বল নক্ষত্র। আশির দশকের শুরুতে চট্টগ্রামে সংগীত জীবন শুরু তাঁর। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন। সঙ্গে ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। প্রকাশ করে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। প্রথম অ্যালবাম দিয়ে সেই সময় স্পটলাইটে চলে আসে ব্যান্ডটি।
১৯৮৭ সালে প্রকাশ পায় ‘অনন্যা’। জেমসের প্রথম একক অ্যালবাম। আসিফ ইকবালের লেখা অ্যালবামের প্রতিটি গানে যেন নতুন এক জেমসের জন্ম হয়। আশির দশকের শেষে শুরু হয় তারকা জেমসের যাত্রা। ১৯৯৩ সালে প্রকাশ হয় ‘জেল থেকে বলছি’। প্রতিটি অ্যালবাম জেমসকে একটু একটু করে নিয়ে যায় শীর্ষ অবস্থানে। ‘ফ্লপ’ শব্দটি নেই জেমসের ক্যারিয়ারে।
‘ফিলিংস’ থেকে জেমস আরও তিনটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ‘নগর বাউল’, ‘লেইস ফিতা লেইস’ ও ‘কালেকশন অব ফিলিংস’- প্রতিটি অ্যালবামই সুপার হিট। এর মধ্যে প্রকাশ পায় জেমসের আরও তিনটি একক অ্যালবাম। সেগুলো হলো- ‘পালাবো কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’ ও ‘ঠিক আছে বন্ধু’।
ব্যান্ড সংগীত নিয়ে বিতর্কিত ধারণা কমতে থাকে নব্বই দশকে। জেমসের ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’র টাইটেল গানটি জেমসের একক জনপ্রিয়তাকে শীর্ষে নিয়ে যায়। ‘কালেকশন অব ফিলিংস’-এর পর জেমস গড়েন নতুন ব্যান্ড। নাম ‘নগর বাউল’। ‘ফিলিংস’ ছেড়ে দেওয়ার পর জেমস মনোযোগী হোন একক ক্যারিয়ারে। ‘নগর বাউল’ থেকে প্রকাশ পায় মাত্র দুটি অ্যালবাম- ‘দুষ্টু ছেলের দল’ ও ‘বিজলি’।
বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বলিউডেও জনপ্রিয় জেমস। ২০০৫ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমার ‘ভিগি ভিগি’ দিয়ে বলিউড ক্যারিয়ার শুরু। এরপর ২০০৬ সালে ‘চাল চালে’, ২০০৭ সালে ‘আলবিদা’ ও ২০১৩ সালে প্রকাশ প্রায় ‘বেবাসি’ গানগুলো।
ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনতে চান না জনপ্রিয় এই তারকা। তাই তাদের সম্পর্কে ভক্তদের জানাশোনাও কম। জেমসের স্ত্রী বেনজির সাজ্জাদ। তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে দানেশ। দুই মেয়ে জান্নাত ও জাহান।
সাম্প্রতিক সময়ে জেমসের নতুন গান প্রকাশের সংখ্যা খুবই কম। তবে পুরানো গানেই ভক্তদের মনে এখনও সমান দোলা দেন তিনি। জেমসের গানের সুরক্ষায় সমর্থন জানাচ্ছেন ভক্তরা।