নারায়ণগঞ্জ সিটিতে নৌকার কাণ্ডারি আইভী
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
আজ শুক্রবার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ও দলের সংসদীয় বোর্ডের যৌথ সভায় এ মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সিটিতে দলীয় প্রার্থী হতে চারজন নেতার নাম আসে। এর মধ্যে থেকে ডা. আইভীকেই আবারও বেছে নিল আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
একসময়ের প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত শীতলক্ষ্যাপাড়ের এ শিল্পনগরীর সিটি করপোরেশনে তৃতীয়বারের ভোটযজ্ঞ হতে যাচ্ছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদম রসুল এ তিনটি পৌরসভা বিলুপ্ত করে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। একই বছর ৩০ অক্টোবর প্রথমবারের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করে সিটির প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী, যিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে আইভী বিলুপ্ত হওয়া নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই নির্বাচনে ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে মাঠ ছেড়ে যান বিএনপির প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর যখন দ্বিতীয় নির্বাচন হয়; তখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে ডা. আইভী প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিদলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে সাড়ে ৭৯ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে পুনরায় মেয়র পদে নির্বাচিত হন।
এবার তৃতীয়বারের মতো মেয়র পদে লড়বেন আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা।
আইভীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
১৯৬৬ সালের ৫ জুন নারায়ণগঞ্জের এক রাজনৈতিক পরিবারে আইভীর জন্ম। বাবা আলী আহমেদ চুনকা ছিলেন স্বাধীনতা উত্তরকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম চেয়ারম্যান। তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
১৯৮২ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৮৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে চিকিৎসাবিদ্যায় পড়শোনার জন্য স্কলারশিপ পেয়ে রাশিয়ায় চলে যান। সেখানে ওদিসা পিরাগভ মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৯২ সালে এমডি ডিগ্রি লাভ করে দেশে ফিরে আসেন। পরে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে ইন্টার্নশিপ করেন। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জে ২০০ শয্যা হাসপাতালে কাজ করেন। ১৯৯৫ সালে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য নিউজিল্যান্ডে চলে যান। ২০০২ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি বিপুল ভোটে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নারী চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।