ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে অগ্ন্যুৎপাতে নিহত ১, প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছে বহু মানুষ
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট অগ্ন্যুৎপাতে একজন নিহত এবং ৪১ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে—ধেয়ে আসা ছাইয়ের মেঘ থেকে পালাচ্ছে দ্বীপের মানুষজন। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরের দিকে হঠাৎ করে সেমেরু পর্বত আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।
কোন কোন জায়গায় ছাইয়ের মেঘে সূর্য সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে যাওয়ায় সবকিছু ঘন অন্ধকারে ছেয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন—আগ্নেয়গিরির আশপাশের গ্রামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এয়ারলাইন্সগুলোকে ছাইয়ের মেঘের কারণে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে—এ ছাই ৫০ হাজার ফুট পর্যন্ত ওপরে উঠে যেতে পারে।
অর্ধশতাব্দী ধরে সুমেরু আগ্নেয়গিরি থেকে প্রায়ই অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে তিন মাইল পর্যন্ত এলাকায় কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
স্থানীয় কর্মকর্তা তরিকুল হক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ওই এলাকার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মালাং শহরের সড়ক ও সেতু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘খুব দ্রুত পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে।’
অস্ট্রেলিয়ার ভলক্যানিক অ্যাশ অ্যাডভাইজরি সেন্টার বলছে, আগ্নেয়গিরির ছাই ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে এয়ারলাইন্সগুলোকে সতর্ক করা হয়। সেখানকার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বেশির ভাগ উড়োজাহাজ যে উচ্চতায় ওড়ে, সেমেরু আগ্নেয়গিরির ছাই তার চেয়েও ওপরে উঠেছে।
উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে ছাই ঢুকে গেলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া ছাইয়ের কারণে পাইলটেরা স্পষ্ট দেখতে পান না এবং উড়োজাহাজের ভেতরে বাতাসের মান খারাপ হয়ে যেতে পারে। তখন অক্সিজেন মাস্ক পরা অপরিহার্য হয়ে উঠতে পারে।
মাউন্ট সেমেরু একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এটি থেকে চার হাজার ৩০০ মিটার উঁচুতেও ছাই নির্গত হয়েছে।
মাউন্ট সেমেরু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তিন হাজার ৬৭৬ মিটার ওপরে অবস্থিত। ইন্দোনেশিয়ায় সক্রিয় ১৩০টি আগ্নেয়গিরির মধ্যে এটি একটি। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরও এখান থেকে সবশেষ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে। সে সময় কয়েক হাজার মানুষকে সেখান থেকে পালিয়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল।