সাক্ষাৎকার
৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প যেকোনো সময় : ড. আখতার
ভারতে সোমবার হয়ে যাওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। এতে জনমনে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে কথা বলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়া প্লেট, বার্মা প্লেট সংযোগস্থল বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের ভেতরে ও আশপাশে বেশ কিছু সক্রিয় প্লেট রয়েছে।’
ড. আখতার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘গত ৪০০ বছরে এখানে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। ১৮৭৮ সালে ৮ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর আগে ১৭৮৭ সালে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথের পরিবর্তন হয় ভূমিকম্পের ফলে। এর পর ১৭৬২ সালের ২ এপ্রিল বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয়। বে-অব বেঙ্গলে সুনামির সৃষ্টি হয় ও টেকনাফসহ ছোটখাটো দ্বীপ এলাকা তলিয়ে যায় এবং সেখানে কাদার উদগিরণ হয়। সে সময় পর্তুগিজ জাহাজের এক ক্যাপ্টেন স্বচক্ষে ওই দৃশ্য দেখেন। ১৭৬২ সালের আগে সেন্ট মার্টিনের অস্তিত্ব ছিল না, ১৭৬২ সালের ভূমিকম্পের ফলে সেন্ট মার্টিনের উদ্ভব হয়।’
প্লেটের গতিপথ সম্পর্কে ড. আখতার বলেন, ‘ইন্ডিয়া আর বার্মা প্লেট আটকে আছে ৩০ কিলোমিটার গভীরে এবং গত এক হাজার বছরে এখানে কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়নি। তবে প্লেটের গতিপথ প্রতি ১০০ বছরে ১ দশমিক ৫ মিটার করে পরিবর্তন হয়েছে। তাহলে এক হাজার বছরে ১৫ মিটার চ্যুতি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভূমিকম্প হলে ৮-এর ওপরে ৯-এ চলে যেতে পারে। আর সেটার আংশিক প্রতিফলন আজ ভোরে দেখা দিয়েছে, যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮। আর এই ইন্ডিয়া-বার্মা প্লেটের আংশিক শক্তি আজ সামান্য রিলিজ করেছে। তবে এর বেশির ভাগ শক্তি রয়েছে ভেতরে, যা যেকোনো সময়ে উদগিরণ হতে পারে। আর এ কারণেই বাংলাদেশে আজ এই ভূমিকম্প দেখা দেয়। তবে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। আর বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা সিলেট অঞ্চল। ভবিষ্যতে দেশে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প যেকোনো সময় হতে পারে।’
এ ধরনের বড় ভূমিকম্প মোকাবিলায় আগে থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।