শ্রদ্ধা
মমতাময়ী মাদার তেরেসা
মাদার তেরেসা ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট অটোম্যান সাম্রাজ্যের ইউস্কুবে (অধুনা মেসিডোনিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী স্কোপিয়ে) জন্মগ্রহণ করেন। ১২ বছর বয়স থেকে তিনি ধর্মীয় দীক্ষা নেন। ১৮ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করে মানবসেবার ব্রত নিয়ে চলে যান আয়ারল্যান্ডে, সেখান থেকে কলকাতায়।
জীবনের বাকিটা সময় কলকাতায় মানবসেবায় কাটিয়ে দেন তিনি। এ জন্য তাঁকে ‘ব্লেসড তেরেসা অব কলকাতা’ নামেও অভিহিত করা হয়। ১৯৫০ সালে কলকাতায় ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’ নামে একটি সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন মাদার তেরেসা। তার পর এই প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এগিয়ে চলে তাঁর নিরন্তর মানবসেবা।
খুব অল্প সময়ে মাদার তেরেসার মিশনারিজের কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। বর্তমানে ১৩৩টির বেশি দেশে মানবসেবায় কাজ করছে মাদার তেরেসার নিজ হাতে গড়া সেবামূলক এই প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধকালে মাদার তেরেসা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত। দেশ ছেড়ে কলকাতায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অনেকেই। শরণার্থীদের এমন করুণ অবস্থা দেখে মাদার তেরেসা তাঁর সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে হাজির হন কলকাতার সল্টলেকসহ আরো বেশ কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে।
নিজ হাতে তাঁদের সেবা করেছেন। সেই সঙ্গে শরণার্থীদের সাহায্য করতে পৃথিবীর বিবেকবান মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। শরণার্থী শিবিরে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে মাদার তেরেসা বলেছিলেন, ‘আমি পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে শরণার্থী শিবিরে কাজ করেছি। আমি শিশু আর প্রাপ্তবয়স্কদের মরতে দেখেছি। সে কারণেই আমি পৃথিবীকে বলতে পারি, এ পরিস্থিতি কত ভয়াবহ এবং এখানে কত জরুরি সাহায্য দরকার।’
মাদার তেরেসার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ এগিয়ে আসে শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য। ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন মাদার তেরেসা। মমতাময়ী মাদার তেরেসা ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
লেখক : প্রদায়ক, এনটিভি অনলাইন