ঈদুল আজহা ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির বার্তা দেয়
আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ সকল দ্বন্দ-বিবাদ ভুলিয়ে দেয়। তাই ঈদের মতই সবার জীবন হোক শান্তিময় ও আনন্দময়। সকলকে ঈদ মোবারক।
ঈদুল আজহা আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে ঈদুল আজহা অন্যতম। এই ঈদে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতি বছর ঈদুল আজহা জ্বিলহজ্জের ১০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের আগের দিন থেকে শুরু করে ঈদের দিন পর্যন্ত সবাই একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বর্তমান ডিজিটাল এই যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো খুব সহজতর।
ঈদুল আজহা দেশজুড়ে সাড়ম্বরে উদযাপিত হচ্ছে। ইটপাথরের যান্ত্রিক শহর ছেড়ে আবহমান গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক শ্যামলীমায় প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার আকুতির নামই হচ্ছে– ঈদের প্রকৃত আনন্দ।
এই ঈদে রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য জেলা থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেছেন অধিকাংশ সাধারণ মানুষ। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশি ও প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার মাধ্যমে এক সামাজিক মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ত্যাগ, আত্মশুদ্ধি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পূর্ণতা পায়।
সবাই ঈদের দিন কোলাকোলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে। এরপর আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী, স্বচ্ছল মুসলমানরা আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করেন। আর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এই আত্মত্যাগই হচ্ছে —‘কোরবানি’।
এই ঈদে ধনী-গরিব সব ভেদাভেদ ভুলে প্রতিহিংসা ত্যাগ করে ভালোবাসা ও ন্যায়ের মূল্যবোধে সবাই একসঙ্গে জেগে উঠি। বছরের প্রতিটি দিনই হোক ঈদের দিনের মতো আনন্দময়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের সকল কারাগার, সরকারি হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, শিশু সদন, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, সেফ হোম, দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্র এবং শিশু ও মাতৃসদনে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয় ।
ত্যাগের শিক্ষা মনে ধারণ করে, হিংসা-বিদ্বেষকে মন থেকে চিরতরে দূর করতে হবে। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি করতে হবে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্টের সকল ক্ষেত্রে ত্যাগের মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। দুস্থ ও আর্ত মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
ঈদুল আজহা আমাদের ব্যক্তি অহংকারকে চূর্ণ করে দেয়। কোরবানি ব্যক্তির পাশবিকতাকেও চূর্ণ করে। এছাড়া এই ঈদ আমাদেরকে সহমর্মী করে তোলে। তাই ঈদুল আজহার এই ত্যাগের শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে বাস্তবায়ন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সুতরাং ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনে এই ত্যাগের দৃষ্টান্ত অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে যুগ থেকে যুগান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক সারাবিশ্বে।
লেখক : সাংবাদিক