আতর, টুপি ও জায়নামাজের বাজারে শেষ মুহূর্তের ভিড়
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের জন্য শেষ সময়ে টুপি, জায়নামাজ ও আতরের দোকানে ভিড় করছেন মানুষ। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। গেল কয়েকদিন ক্রেতার সংখ্যা সন্তোষজনক হওয়ায় এখানকার ব্যবসায়ীরাও খুশি।
রাজধানীর বায়তুল মোকররম মসজিদ মার্কেট, গুলিস্তান, কাঁটাবন মসজিদ মার্কেট, কাকরাইল মসজিদ মার্কেটসহ ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যায় টুপি, জায়নামাজ আর আতর। তবে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের নিচ তলায় আতর-টুপির দোকানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি দোকানে সাজানো বাহারি সব টুপি-জায়নামাজ। আতর, আতরদানি, সুরমা, পাঞ্জাবি, তসবিহও পাওয়া যায় এখানে। এক ছাদের নিচে ঈদের নামাজ সংক্রান্ত বিভিন্নরকমের পণ্য পেতে এখানে শেষ সময়ে ভিড় করেন নগরবাসী।
আতর-টুপি-জায়নামাজ-তসবিহ
বুধবার বায়তুল মোকররম মসজিদ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সুবাসের আতর বিক্রি হচ্ছে এখানে। ধরন অনুযায়ী দামও বিভিন্ন রকমের। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে সাধারণত কম্বোডিয়া, ভারত, বুলগেরিয়া, দুবাই, ফ্রান্স, সৌদিআরব থেকে আতর বেশি আসে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দেশি আতরও পাওয়া যায় এখানে।
দোকানিরা জানিয়েছেন, আতর বিক্রি হয় তোলা হিসেবে। উদ, কস্তুরি, মুস্তাহ আল তাহারা, আল হারমাইন শেখসহ বিভিন্ন নামের আতরের দাম বেশি। এক তোলা আতর ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। রাসায়নিকভাবে তৈরি আতরের দাম কম। এছাড়া দেশি আতর ছাড়াও বাহারি ডিজাইনের আতরের দানি (বোতল) পাওয়া যায়। কাঁচ, প্লাস্টিক ছাড়াও বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রণে তৈরি এসব আতরদানিও বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়।
আতর বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, এখন দেশি কিছু আতর দাম কম হওয়ায় বেশি চলে। দেশি আতর ৫০ থেকে ২ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। তবে কিছু মানুষ আছেন যারা- উদ, কস্তুরিসহ বিশেষ ধরনের আতর পছন্দ করেন। দাম বেশি হওয়ায় এ ধরনের আতরের ক্রেতাও কম, বিক্রিও কম।
ঈদের জামাতে নতুন টুপি কিনতে মার্কেটে এসেছেন অনেকেই। বায়তুল মোকাররম মার্কেটে দেশি টুপি ছাড়াও পাকিস্তান ও চীনের তৈরি টুপি বিক্রি বেশি। কম দামে বৈচিত্রময় ডিজাইনের টুপি হওয়ায় পাকিস্তানি ও চীনা টুপির চাহিদা বেশি। এছাড়া তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া থেকেও টুপি আসে দেশে। নকশা, কাপড় ভেদে ৫০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা দামের টুপিও পাওয়া যায়। ১৫০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে চীনা ও পাকিস্তানি টুপি পাওয়া যায়।
বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের আল মোত্তাকিম হাউজের কর্ণধার মো. আলামিন বলেন, দেশে-বিদেশি সব ধরনের টুপি আমরা বিক্রি করি। সবাই নতুন নতুন ডিজাইন চায়। এ কারণে বেদেশি টুপি বিক্রি হয় বেশি। গেল দুই বছর তো বেচাকেনা তেমন ছিল না, এবার বিক্রি ভালো। জায়নামাজ পাওয়া যায় বিভিন্ন দামের। পাকিস্তান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের জায়নামাজ বিক্রি হয় বেশি। প্রকারে ভেদে দামের ভিন্নতাও রয়েছে। ২০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকায়ও জায়নামাজ বিক্রি হয়। চীন, ভারত, বেলজিয়াম থেকেও জায়নামাজ বাংলাদেশে আসে।
মিরপুর থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে জায়নামাজ কিনতে এসেছেন আফজাল হোসেন নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ‘বায়তুল মোকাররমে অনেক দোকান, এদের কালেকশনও বেশি। তাই পছন্দ মতো কেনা যায়। এ কারণে প্রতিবছর এখানে আসি। ঈদের নামাজ পড়তে নতুন টুপি তো লাগেই, এবার জায়নামাজও কিনলাম।’