মক্কায় সমবেত লাখ লাখ মুসল্লি, হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু কাল
পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের মক্কায় ইতোমধ্যে হাজির হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...’ ধ্বনিতে মুখরিত কাবা চত্বর। হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। সক্ষম যেকোনো মুসলমানের ওপর অন্তত একবার হলেও হজ করা ফরজ।
পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার (১৪ জুন)। এদিন ভোরে মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম শুরু হবে।
লাখ লাখ মুসল্লির ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হবে পবিত্র মিনা প্রাঙ্গণ। হজের অংশ হিসেবে হাজিরা শনিবার ভোর পর্যন্ত অবস্থান করবেন মিনায়। সেখানে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় জিকির ও ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে সময় কাটাবেন তারা। জামাতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন তারা।
এরপর শনিবার (৯ জিলহজ) ভোরে আরাফাতের উদ্দেশে যাত্রা করবেন হাজিরা। সেখানে হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন। এরপর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন।
মুজদালিফায় পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন হজযাত্রীরা। এরপর মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন। সেখান থেকে তারা মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
রোববার (১০ জিলহজ) সকালে ফজরের নামাজ শেষে আবার মিনায় ফিরে আসবেন তারা। জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগের মাধ্যমে হজের মূল কার্যক্রম শেষ করবেন। পরে পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন।
সৌদি কর্মকর্তারা বলেছেন, এ বছর হজযাত্রীর সংখ্যা গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছেন তারা। ২০২৩ সালে ১৮ লাখের বেশি লোক হজ করতে দেশটিতে জড়ো হয়েছিলেন। করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে ২৪ লাখের বেশি মুসলমান হজে অংশ নেন।
সৌদির পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত সোমবার (১০ জুন) পর্যন্ত আকাশ, স্থল ও সমুদ্র বন্দর দিয়ে সৌদি আরবে আসা হজযাত্রীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৫ জনে পৌঁছেছে। এ বছর ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩১২ জন হজযাত্রী বিভিন্ন ফ্লাইটে, ৫৯ হাজার ২৭৩ জন হজযাত্রী স্থলবন্দর দিয়ে এবং ৪ হাজার ৭১০ জন হজযাত্রী সমুদ্রবন্দর দিয়ে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে পর্যন্ত এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ বলেছে, এবারের হজ মৌসুমে উচ্চ তাপমাত্রা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কিছু নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে তিনটি এয়ারলাইনসের ১২৭টি ফ্লাইটে মোট ৮৫ হাজার ১২৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ১০৫টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ৭৫টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ৩৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।