সূচকে বড় পতন, মূলধন কমেছে ১১ হাজার কোটি টাকা
ফ্লোর প্রাইস (নিম্নসীমা) তুলে দেওয়ার পরের কর্মদিবস আজ রোববার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচকে বড় ধরনের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। কমেছে ৭৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। পুঁজিবাজারে মূলধন পরিমাণ কমেছেও লক্ষ্য করার মতো। আগের কার্যদিবসের চেয়ে এদিন লেনদেন পরিমাণ কমেছে।
পতন প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় অনেকে এতোদিন শেয়ার বিক্রি করতে পারেনি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যা আজ থেকে কার্যকর হয়। এদিন অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির দিকে ঝুঁকে পড়েন। অনেকে লসে শেয়ার বিক্রি করেন। এতে ডিএসইতে বিক্রয়ের চাপে বাড়ে। ফলে তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর পতন ঘটে।
তারা আরও বলেন, আজ ডিএসইর প্রধান ডিএসইএক্স ৯৬ পয়েন্ট পতন হয়েছে। ডিএসই এদিনে মূলধন হারায় ১১ হাজার কোটি টাকা। একই অবস্থা চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।
এধরনের পতন সাময়িক জানিয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ায় হঠাৎ করে শেয়ার বিক্রিতে চাপ পড়েছে। তবে এ চাপ থাকবে না। তাই এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরতে বললেন তারা। একই সাথে লসে শেয়ার বিক্রি না করার পরামর্শ দেন।
স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট সূত্র জানা যায়, রোববার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৬৩৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। অপরদিক এদিন পুঁজিবাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৭৬ হাজার ৯১৩ কোটি ৭৬ টাকা। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৮৭ হাজার ৯০৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার। একদিনে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ৯৯১ কোটি ২ লাখ টাকা।
ডিএসইর সূচক ডিএসইএক্স ৯৬ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৪০ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক ১৪ দশমিক ১২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৭৪ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএস৩০ সূচক সাত দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৩৭ দশমিক ১৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে এদিনে লেনদেন হওয়া ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৪টির ও কমেছে ২৯৬টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ৩৬টির। আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বিডি থাইয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেন শীর্ষ উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ওরিয়ন ইনফিউশনের ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, দেশবন্ধু পলিমারের ১৮ কোটি ছয় লাখ টাকা, সী পার্ল বিচের ১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) রোববার ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৭২ হাজার ৭৯৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৮২ হাজার ৭৬০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। একদিনে বাজার মূলধন কমেছে ৯ হাজার ৯৬০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৭৬ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩২৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে। সিএসই৫০ সূচক ৩১ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৬৭ দশমিক ২৪ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ২৮৩ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে ও সিএসআই সূচক ২৫ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট কমেছে।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২১৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ১৫৮টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ১৯টির। এদিন লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা খান ব্রাদার্সের পাঁচ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, সন্ধানী ইন্স্যুরেন্সের ৩৪ লাখ টাকা, একমি পেস্টিসাইডসের ৩২ রাখ টাকা, বিডি থাইয়ের ৩১ লাখ টাকা এবং একমি ল্যাবের ৩১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।