অনুভূতি প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন কোহলি
অ্যাডিলেডে দুঃস্বপ্নের মতো দিন পার করল ভারত। টেস্টের প্রথম দুদিন চালকের আসনে থেকেও নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের বড় লজ্জা পেল তারা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬ রানে অলআউট হয়ে ৪৬ বছর পর বিব্রতকর রেকর্ড গড়ল সফরকারীরা। এমন ম্যাচের পর অনুভূতি প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
এই টেস্টের পরেই সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার কথা ভারতীয় অধিনায়কের। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার আগে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে দিনের সাক্ষী হলেন কোহলি।
অ্যাডিলেডে চার ম্যাচ সিরিজের একমাত্র দিবারাত্রীর টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে আট উইকেটে হেরেছে ভারত। জয়-পরাজয়ের চেয়ে বিস্ময়কর ছিল ভারতীয় স্কোর বোর্ড। প্রথম ইনিংসে লিড পাওয়া ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে যায়। এক ব্যাটসম্যানও যেতে পারলেন না দুই অংকের ঘরে।
ভারতের টেস্ট ইতিহাসে এটাই এখন সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে টেস্টে এক ইনিংসে ভারতের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ৪২ রান। সেটা ছিল ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ৪৬ বছর পর এবার নতুন লজ্জায় ডুবল ভারত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটা সপ্তম দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এই তালিকায় সবার উপরে আছে নিউজিল্যান্ড। ১৯৫৫ সালে ২৬ রানে অলআউট হয়েছিল কিউইরা।
টাইমস নাউ নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী ম্যাচ শেষে কোহলি বলেন, ‘এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা খুব কঠিন। প্রায় ৬০ রানের লিড ছিল আমাদের কিন্তু এরপরও আমরা ধসে পড়লাম। আপনি যখন দুদিন কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে আসেন এবং তারপর একটি ঘন্টা আপনাকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে দিলো যেখান থেকে জেতা আক্ষরিকভাবে অসম্ভব। সত্যিই মর্মাহত।’
ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ব্যাটসম্যানকে নিবেদন কম ছিল বলে মনে করেন কোহলি, ‘আমার মনে হয় আজ ব্যাটিংয়ে আমাদের যথেষ্ট নিবেদন ছিল না। তারা প্রথম ইনিংসেও একই রকম বোলিং করেছিল। আমাদের সম্ভবত শুধু রান নেওয়ার মনোভাব তৈরি হয়েছিল। ছেলেদের আরো আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে হবে। আশাকরি বক্সিং ডে টেস্টে ভালো ফল আসবে।’
আজ শনিবার ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ। প্যাট কামিন্স আর হ্যাজেলউডের তাণ্ডবে ১০-এর ঘর পার করতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। তাঁদের রান সংখ্যা যথাক্রমে ৪, ৯, ২, ০, ৪, ০, ৮, ৪, ০, ৪। অধিনায়ক কোহলিও করেন চার রান। ভারত অবশ্য অলআউট হয়নি। শেষ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শামি রিটায়ার্ড হার্ট হয়েছেন। তবুও লজ্জার রেকর্ডের তালিকায় নাম উঠল কোহলিদের।
বল হাতে আগুন ঝরানো হ্যাজেলউড পাঁচ ওভার বোলিং করে মাত্র ৮ রান দিয়ে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। আরেক বোলার প্যাট কামিন্স ১০.২ ওভার বোলিং করে নিয়েছেন চার উইকেট।