আইরিশদের দ্রুত থামানোর লক্ষ্যে লড়াইয়ে বাংলাদেশ
জয়ের অপেক্ষায় থেকে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) তৃতীয় দিন আয়ারল্যান্ডকে দ্রুত থামাতে পারালেই বিশাল জয় পাবে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে আজ টেস্টের তৃতীয় দিন মাঠে নেমেছে সাকিব আল হাসানের দল।
গতকাল বুধবার (৫ এপ্রিল) দিনের শেষ সময়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে ২৭ রান তুলেছে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের ইনিংস থেকে ১২৮ রানে পিছিয়ে থেকে আজ টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করেছে আইরিশরা।
এই টেস্টের তৃতীয় দিনেই জয় তুলে নিতে দ্রুত আয়ারল্যান্ডকে থামাতে হবে বাংলাদেশের। ১২৮ রানের মধ্যে অতিথিদের বাকি ছয় উইকেট নিতে পারলে তিন দিনেই ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বাদ নিতে পারবে সাকিব আল হাসানের দল।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ৮০.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৩৬৯ রান তোলে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের চেয়ে ১৫৫ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে আইরিশরা।
কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়ে যায় আয়ারল্যান্ড। প্রথম ইনিংসের ৬৫তম ওভার পর্যন্ত বোলিংয়ে না আসা সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই আসেন। এসেই প্রথম ওভারে তুলে জেমস ম্যাককলামের উইকেট। দলীয় ১ রানে তাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন অধিনায়ক। আরেক ওপেনার মুরে কমিন্স কাটা পড়েন তাইজুলের স্পিনে। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের পিচ করা বলে এলবির শিকার হয়ে ফেরেন কমিন্স। পরের শিকারও তাইজুলের। এবার বোল্ড করেন অ্যান্ডি বালবার্নিকে। বাঁহাতি স্পিনারের আর্ম ডেলিভারি খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন আইরিশ অধিনায়ক।
এরপর ফের উইকেট উৎসবে যোগ দেন সাকিব। ফিরিয়ে দেন কর্টিসকে। দুই স্পিনার মিলে মাত্র ১৩ রানে তুলে নেন ৪ উইকেট। এত দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আইরিশরা। যে চাপের মধ্যে থেকেই কাল দ্বিতীয় দিন শেষ করে সফরকারীরা
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৮০ রানে পিছিয়ে থেকে কাল ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। দিনের শুরুটা চার মেরে করলেও নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে মমিনুলের আউট হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল। হয়েছেও তাই, দলীয় ৪০ রানে মার্ক অ্যাডাইরের বলে বোল্ড আউট হন মমিনুল। ৩৪ বল খেলে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার।
মমিনুলের বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়লেও সাকিব-মুশফিকের দৃঢ়তায় খুব ভালোভাবেই সামাল দেওয়া গেছে সেই চাপ। এর মধ্যে ৪৫ বলে সাকিব পূরণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৫তম ফিফটি। সাকিবের পর ফিফটি পূরণ করেন আরেক ব্যাটার মুশফিক। ৭২ বল থেকে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটি।
এই জুটিতেই দিনের প্রথম সেশনে এক উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তোলে বাংলাদেশ। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির পরই দলীয় ২৮৬ রানে সাকিবের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের সাদামাটা বল খেলতে গিয়ে ৮৭ রানে আউট হন সাকিব। ৯৪ বলে তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১৪টি বাউন্ডারি দিয়ে। ১৮৮ বল স্থায়ী হয়ে ১৫৯ রানে ভাঙে এই জুটি।
এরপরও উইকেটে থিতু ছিলেন মুশফিক। টিকে থেকে লিটনের সঙ্গে গড়েন আরেকটি জুটি। ১৩৫ বলে নিজে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি। তাঁকে সঙ্গ দেওয়া লিটন দাস ৪১ বলে ৪৩ রান করে বিদায় নেন। মুশফিকের প্রতিরোধ ভাঙে শেষ সেশনে।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে এসে পায় লিডের দেখা। লাঞ্চ বিরতির পর এই সেশনে বাংলাদেশ দুই উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১৪৬ রান। আর শেষ সেশন মিলিয়ে মোট রান দাঁড়ায় ৩৬৯ এ। শেষ সেশনে ১৬.৩ ওভার খেলতে পারে বাংলাদেশ। এই সময়ে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৫৩ রান যোগ করে সাকিব আল হাসানের দল।
সেঞ্চুরিতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২৬ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ১৬৬ বলে তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১৫টি বাউন্ডারি ও এক ছক্কা দিয়ে। শেষ দিকে ৮০ বলে ৫৫ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে টেস্টের প্রথম দিন মিরপুরে আগে ব্যাট করে ২১৪ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। শেষ বিকেলে খেলতে নেমে ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৪ রান তোলে বাংলাদেশ।