কসম খেয়ে বলতে পারি ওই চিঠি জিদান লেখেনি : রিয়াল সভাপতি
গত মৌসুম শেষে হুট করে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন ফরাসি কোচ জিনেদিন জিদান। রিয়াল ছাড়ার বেশ কিছুদিন পর লম্বা চিঠিতে স্প্যানিশ ক্লাবটি ছাড়ার কারণ জানান তিনি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএসকে এক চিঠির মাধ্যমে জিদান জানিয়েছেন, ক্লাব তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না বলেই নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ওই চিঠিতে ক্লাবের বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে কথা বলেছেন জিদান। কিন্তু জিদানের ওই চিঠি লেখা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না ক্লাবটি সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ওন্দা চেরো’র ত্রানসিস্তর অনুষ্ঠানে নিজের নাতি-পুতির কসম খেয়ে পেরেজ জানান, ওই চিঠি জিদান লিখেছেন বলে বিশ্বাস করেন না তিনি।
মার্কার প্রতিবেদন অনুযায়ী পেরেজ বলেন, ‘আমি ওকে চিনি। আমাদের জন্য বছরটা বেশ কঠিন গেছে। তাও আমি চেষ্টা করেছিলাম ওকে দলে রাখার জন্য। আমি তার বিদায়ী চিঠিটা পড়িনি। তবে আমি আমার নাতিপুতিদের কসম খেয়ে বলতে পারি, ওই চিঠি জিদান লেখেনি। আরেকজন লিখেছে।’
এরপর জিদানকে শুভকামনা জানিয়ে রিয়াল সভাপতি বলেন, ‘আমি তার শুভ কামনা করছি। সে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য কিংবদন্তি হয়ে থাকবে। ফ্রান্সের কোচ হওয়ার স্বপ্ন তার রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত যে সে তা অর্জন করবে।’
বিদায়ী চিঠিতে জিদান লিখেছিলেন, ‘প্রিয় রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরা, আজ থেকে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে যখন সাদা জার্সিতে আমি রিয়ালে পা রাখি, তখন থেকে আপনারা আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন। আমি সবচেয়ে সেরা ক্লাবের খেলোয়াড় ও কোচ হওয়ার সম্মান পেয়েছি। এ ছাড়া আমি নিজেও রিয়ালের একজন ভক্ত। এই কারণে আপনাদের উদ্দেশে চিঠিটি লিখলাম আপনাদের বিদায় জানাতে এবং আমার কোচিংয়ের চাকরি ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে।’
এরপর জিদান কারণ ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ‘২০১৮ সালের মে মাসে ক্লাব ছেড়েছিলাম। কারণ, তখন আমার মনে হয়েছিল, আড়াই বছরের সাফল্য এবং এতগুলো শিরোপার পর দলকে উদ্বুদ্ধ করতে নতুন কাউকে দরকার। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার আমি ক্লাব ছাড়ছি, কারণ ক্লাব আমার ওপর সেভাবে আস্থা রাখতে পারছিল না। একটি নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে যেমন সমর্থন দরকার, সেটি আমি পাচ্ছিলাম না রিয়ালের কাছ থেকে। আমি ফুটবল বুঝি। বুঝি রিয়ালের কী কী দরকার। আমি জানি, যখন জেতা যায় না, তখন সরে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু এখানে আমার অর্জনগুলোকে ভুলে যাওয়া হয়েছে।’
সাবেক ফরাসি তারকা আরও লিখেছেন, ‘প্রতিদিন ক্লাবের প্রত্যেকের সঙ্গে আমি সম্পর্ক গড়ে তুলেছি। আমি জন্মেছি জেতার জন্যই। এখানে এসেছিলাম শিরোপা জেতার জন্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষ, জীবন ও আবেগের মতো বেশ কিছু জিনিস থাকে, যেগুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। কোনো না কোনোভাবে আমার ঘাড়ে দোষ চাপানোর একটা প্রবণতা দেখেছি। আমরা সবাই মিলে এখানে যে সাফল্য অর্জন করেছি, আমি সবার চোখে শুধু সম্মানের দৃষ্টিটাই দেখতে চেয়েছিলাম।’
এ ছাড়া ক্লাবের কর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন জিদান। শেষে লিখেছেন, ‘অবশ্যই আমি এখন আর বিশ্বের সেরা কোচ নই। তবে আমি খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফের সদস্য বা যেকোনো কর্মচারীই হোক না কেন, তাদের কাজের প্রতি তাদের যে শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস দরকার তা সবাইকে দিতে সক্ষম হয়েছি।’