কোহলির উত্তরসূরি হিসেবে পন্থকে দেখতে চান গাভাস্কার
সীমিত ওভারের নেতৃত্ব থেকে আগেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিরাট কোহলি। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আচমকাই সাদা পোশাকের নেতৃত্বকে বিদায় বলে দিলেন। কোহলির টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর এখন বড় প্রশ্ন—কে হবেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক?
অনেকেই লোকেশ রাহুল ও রোহিশ শর্মার নাম আনলেও সুনীল গাভাস্কার আনলেন একেবারে তরুণদের একজনকে। কোহলির উত্তরসূরি হিসেবে কিপার-ব্যাটসম্যান রিশাভ পন্থকে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চান গাভাস্কার।
ইন্ডিয়া টুডেকে ভারতীয় কিংবদন্তি বলেন, ‘পরবর্তী টেস্ট অধিনায়ক কে হবে, তা নিয়ে একটা আলোচনা হবে নির্বাচক কমিটিতে। আমার মনে হয়, এমন একজনকেই করা উচিত যে তিন সংস্করণে অটোমেটিক চয়েস। আর সে ক্ষেত্রে, জবাবটা সহজ হয়ে যায়। যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি রিশাভ পন্থকে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চাইব।’
একটি ব্যাখ্যাও দিয়ে গাভাস্কার বলেন, ‘শুধু একটি কারণে। রিকি পন্টিং যখন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের দায়িত্ব থেকে সরে গেল, তখন রোহিত শর্মাকে অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছিল। এরপর ওর ব্যাটিংয়ে পরিবর্তনটা দেখুন। হঠাৎ করে অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে ৩০, ৪০ কিংবা ৫০ রানের ক্যামিও ইনিংসগুলোকে ১০০, ১৫০ কিংবা ২০০ তে পরিণত করেছে। আমার মনে হয়, দায়িত্ববোধ রিশাভ পন্থকেও নিউজিল্যান্ডসের দারুণ সেঞ্চুরির মতো আরও অনেক ইনিংস খেলতে সাহায্য করবে।’
সাবেক ভারতীয় তারকা আরও বলেন, ‘আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসে রিশাভ পন্থের যে অধিনায়কত্ব আমরা দেখেছি, তাতে আমার বিশ্বাস, সে ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য রাখে।’
বিশ্বকাপ দিয়ে টি-টোয়েন্টি নেতৃত্বের ইতি টানেন কোহলি। এরপর বোর্ডের ক্ষমতাবলে সরে দাঁড়াতে হয় ওয়ানডে থেকে। এবার নিজ দায়িত্বে সরে দাঁড়ালেন টেস্ট থেকে। সব মিলে এখন থেকে কোহলির নামের পাশের ‘অধিনায়ক’ কথাটি আর নেই।
কেপটাউন টেস্ট শেষ করে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিবৃতিতে দিয়ে কোহলি জানিয়েছেন, লাল বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব ছাড়ার এটাই সঠিক সময়।
বিবৃতিতে কোহলি বলেন, ‘দলকে সঠিক পথে নিতে সাত বছরের প্রতিটা দিন কঠোর পরিশ্রম করেছি, নিরবচ্ছিন্ন অধ্যাবসায় বজায় রেখে চলেছি। চূড়ান্ত সততার সঙ্গে আমি দায়িত্ব পালন করেছি। কোনো ফাঁক রাখিনি। প্রতিটা ক্ষেত্রেই কোনো না কোনো সময়ে থামতে হয়। আমার কাছে ভারত টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব (ছাড়ার) সময় এটাই। দীর্ঘ যাত্রাপথে অনেক উত্থান-পতন এসেছে। কিন্তু কখনও চেষ্টার বা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হয়নি। আমি যা কিছু করি, সবসময় ১২০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। সেটা না পারলে বুঝতে পারি এটা করা ঠিক নয়। আমার মনের স্বচ্ছতা শতভাগ। আমার দলের প্রতি আমি অসৎ হতে পারি না।’
‘লম্বা সময় ধরে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য বিসিসিআইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, সতীর্থদের ধন্যবাদ দেওয়া, যারা প্রথম দিন থেকেই দলকে নিয়ে আমার লক্ষ্য পূরণে চেষ্টা করে গেছে, কোনো পরিস্থিতিতেই পিছপা হয়নি। তোমরা আমার এই ভ্রমণকে স্মরণীয় ও সুন্দর করে তুলেছো।’
‘টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিক উন্নতির পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করা রবি (শাস্ত্রী) ভাই এবং সাপোর্ট স্টাফের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনাদের ভূমিকা ছিল অনেক বড়। সব শেষে এম এস ধোনিকে অনেক বড় একটা ধন্যবাদ, যিনি অধিনায়ক হিসেবে আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন।’