ডি মারিয়ার গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে আর্জেন্টিনা
লম্বা সময় ধরে ট্রফির অপেক্ষায় থাকা আর্জেন্টিনা এবার শুরুতেই পেয়ে যায় উদ্যাপনের উপলক্ষ। কোপা আমেরিকার ফাইনালে শক্তিশালী ব্রাজিলের বিপক্ষে দলকে লিড এনে দেন ডি মারিয়া। পিএসজি তারকার গোলে এগিয়ে থেকে শিরোপার যুদ্ধের প্রথমার্ধ শেষ করল প্রতিযোগিতার ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নেরা।
আজ রোববার ঐতিহাসিক মারাকানায় বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হওয়া কোপা আমেরিকার ফাইনালের প্রথমার্ধে ব্রাজিলের বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ২০০৪ সালে সিজার দেলগাদোর পর প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার হিসেবে কোপার ফাইনালে গোল করলেন ডি মারিয়া।
ম্যাচটির প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। প্রথমার্ধের ৫৪ ভাগ সময় বল দখলে রেখেছেন নেইমাররা। আক্রমণেও এগিয়ে ছিল স্বাগতিকেরা। বিরতির আগ পর্যন্ত ছয়টি শট নিয়েছে ব্রাজিল, যার মধ্যে একটি ছিল অন-টার্গেটে যাওয়ার মতো। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার তিন শটের মধ্যে লক্ষ্যে যাওয়ার মতো ছিল একটি। তাতেই সফল লিওনেল স্কালোনির দল।
এদিন ম্যাচের শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখলেন ব্রাজিল তারকা ফ্রেড। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে মন্তিয়েলকে ফাউল করায় ফ্রেডকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। ম্যাচের শুরু থেকেই ফাউলে ভরপুর ছিল ম্যাচটি। প্রথমার্ধের ১১ বার ফাউল করেছে ব্রাজিল, ১০ বার ফাউল করেছে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের ১৩ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ পায় ব্রাজিল। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে নেইমারের দিকে বল বাড়িয়ে দেন রিচার্লিসন। তবে সফল হতে দেননি ওতামেন্দি।
পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের ২২ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে ডি মারিয়ার দিকে বল বাড়ান দি পল। সুযোগ হাতছাড়া করেননি পিএসজি তারকা। বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি বক্সের কাছ থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে ব্রাজিল গোলকিপার এডারসনের মাথার উপর দিয়ে দলকে লিড এনে দেন ডি মারিয়া।
৩২ মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ মিস করে আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ছুটে যান মেসি। বলে শটও নেন। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যভেদ হয়নি। পোস্টের কাছ ঘেঁষে বল চলে যায় মাঠের বাইরে।
পরের মিনিটে নেইমারকে ফাউল করলে ফ্রি-কিক পেয়ে যায় ব্রাজিল। কিন্তু ফ্রিকের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি নেইমার। লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিলে সেই যাত্রায় গোলশূন্য থাকে তিতের শিষ্যরা।
৪২ মিনিটে আরেক দফায় সুযোগ পায় ব্রাজিল। কিন্তু সেবারও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি স্বাগতিকেরা। শেষ পর্যন্ত বিরতির আগে আর গোল না আসলে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
কোপার সেমিফাইনালে পেরুকে ১-০ গোলে হারিয়ে করে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ব্রাজিল। অন্যদিকে, শেষ চারে কলম্বিয়াকে পেনাল্টি শুট-আউটে ৩-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। এবার কোপার শিরোপা জয়ের মিশনে মাঠে নেমেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা।
শিরোপা যুদ্ধে সেমফাইনালের অপরিবর্তিত প্রথম একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে ব্রাজিল। এমনকি তাদের বদলি ফুটবলারের তালিকাও অপরিবর্তিত। তবে শুরুর একাদশে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে আর্জেন্টিনা।
প্রথম একাদশে একসঙ্গে পাঁচটি বদল এনেছে লিওনেল স্কালোনির দল। রিজার্ভ বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে জেল্লা, গঞ্জালেজ, মলিনা, ট্যাগলিয়াফিকো ও রদ্রিগেজকে। প্রথম একাদশে ঢুকেছেন আকুনা, রোমেরো, মন্তিয়েল, পারেদেস ও ডি মারিয়া।
এক-দুই বছর নয়, দীর্ঘ ১৪ বছর পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। যে মাঠে দুদলের লড়াই হচ্ছে, গেল আসরে এই মাঠেই কোপার মুকুট পরেছিল ব্রাজিল। সেখানে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে আর্জেন্টিনার। এই মারাকানাতেই ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে শিরোপা জিততে পারেনি আর্জেন্টিনা। একই মাঠে মেসিরা কেঁদেছিল গেল আসরেও। সেবার স্বাগতিক ব্রাজিলের কাছে হেরে শেষ চার থেকে বিদায় নিয়েছিল তারা।
তবে এবারের সুপার ক্ল্যাসিকোতে কে জিতবে, ব্রাজিল নাকি আর্জেন্টিনা? এই প্রশ্নের উত্তর আজকেই মিলবে।