দারুণ সেঞ্চুরিতে নিজেকে চেনালেন শান্ত
বাংলাদেশ দলের হয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ২০১৭ সালে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ১৮ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ রান করেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান।
পরবর্তী পাঁচ টেস্টে একটি মাত্র হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন শান্ত। তাই প্রায়ই আলোচনা ওঠে, আর কতো সুযোগ দেওয়া হবে তাঁকে। শেষ পর্যন্ত আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টেস্টের প্রথম ইনিংসে চমৎকার একটি সেঞ্চুরি করেন।
১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলতে শান্ত ২৩৬ বল খরচ করেন। ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটি সাজানো ছিল ১২ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়।
এর আগে শান্তর সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষ। গত বছর ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭১ রান করেছিলেন। সে তিনি দীর্ঘদিন পর হলেও নিজেকে চিনিয়েছেন। দেরিতে হলেও চমৎকার একটি সেঞ্চুরি করে নিজের জাতটা ভালোভাবে চেনান তিনি।
শান্তর সেঞ্চুরির দিনে বাংলাদেশও দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিন শেষে দুই উইকেটে ৩০২ রান করে। ৬৪ রানে অপরাজিত আছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।
অবশ্য আগে ব্যাট করে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। সাদমান ইসলামের বদলে ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া সাইফ হাসান আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেন তরুণ এই ওপেনার।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওভারের প্রথম বলে ফার্নান্দোর বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনার সাইফ। অবশ্য ফার্নান্দোর এলবির আবেদনে প্রথমে সাড়া দেননি আম্পায়ার। এরপর অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে রিভিউ নেন। ফার্নান্দোর লেংথ বল সোজা সাইফের সামনের প্যাডে আঘাত করেছিল। দেখার ছিল, বলটি লেগ স্টাম্পে লাগবে না কি বেরিয়ে যাবে। রিভিউতে দেখা যায় বলটি সোজা স্টাম্পেই হিট করত। দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের।
তবে শুরুতে উইকেট হারানোর ধাক্কা ভালোভাবে সামাল দেন তামিম। তরুণ ব্যাটসম্যান শান্তকে নিয়ে এগিয়ে যান বড় স্কোরের দিকে। লাঞ্চের আগে এই জুটিতে চড়ে স্কোরবোর্ডে ১০৬ রান তোলে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৫৩ বলে ক্যারিয়ারের ২৯ তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর আগাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হলো না। সেঞ্চুরি থেকে ১০ রান দূরে থেকে সাজঘরে ফিরেন তামিম।
৯০ রানের মাথায় ফার্নান্দোর বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন দেশসেরা ওপেনার। ১০১ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৫টি বাউন্ডারি দিয়ে। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল গ্লাইড করার চেষ্টা করেন তামিম। বল একটু বেশি লাফিয়ে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপে ফিল্ডারের হাতে। ১৪৪ রানে থামে শান্ত-তামিমের জুটি।
তামিম ফেরার পর মুমিনুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শান্ত। ব্যক্তিগত সপ্তম টেস্ট খেলতে নেমে দারুণ দৃঢ়তা দেখান। তামিমের মতো ভুল না করে এগিয়ে যান তিনি। একই সঙ্গে মুমিনুলও উইকেটে থিতু হয়ে যান। এই জুটিতে চড়ে ভালোভাবে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।