দেশে ফিরল ফুটবলার আতসুর নিথর দেহ
নিজ পায়ে দেশে ফেরার ইচ্ছে ছিল তার, তবে সেই ইচ্ছে আর পূরণ হলো না। দেশে তিনি ফিরেছেন, তবে নিজ পায়ে নয় অন্যদের কাঁধে চড়ে। জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনে দেশে ফিরলেন তুরস্কে ভূমিকম্পে নিহত ঘানার ফুটবলার ক্রিস্টিয়ান আতসু।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, গতকাল রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে ঘানার রাজধানী আক্রার কোতোকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে আতসুকে বহন করা বিমানটি। এ সময় আতসুকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। পরে তার মরদেহ গ্রহণ করেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহামুদু বাওমিয়া।
সেসময় শোক বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা আশার বিপরীতে আশা করেছিলাম, যে দিন কেটে গেছে, আমরা প্রার্থনা করেছি এবং প্রার্থনা করেছি। তবে আফফোস, যখন তাকে পাওয়া গেল, তখন তিনি আর নেই।’
গত শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৩ দিন উদ্ধার করা হলো তার মরদেহ। উদ্ধারকর্মীরা ভবনটির ধ্বংসস্তূপ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার এজেন্ট মুরাত উজুনমেহমেত।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আতসুকে জীবিত উদ্ধারের খবর দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ কিছু গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ধ্বংস্তূপের নিচে আটকে থাকা ফুটবলার আতসুকে জীবিত উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। এরপরই চিকিৎসার জন্যে আতসুকে নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। এমনকি, ধ্বংস্তূপের নিচে চাপা পড়ার কারণে তার ডান পায়ে চোট লেগেছে বলেও জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে। বলা হয়—তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। যদিও পরবর্তীতে আতসুর খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। এতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হলে তাকে খুঁজতে আবারও শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। ৩১ বছর বয়সী ঘানার এই ফুটবলার তুরস্কের যে ভবনে ছিলেন সেটি সাত দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের পর ভেঙে পড়ে। দলের বাকি সদস্যদের খোঁজ মিললেও, নিখোঁজ ছিলেন আতসু।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, রিখটার স্কেলে সাত দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্প স্থানীয় সময় গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিনরাত ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত করে। তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে ছিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল আর এর গভীরতা ছিল ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার। ওই এলাকা জুড়ে তৈরি হওয়া ভূকম্পন রাজধানী আঙ্কারা এবং তুরস্কের অন্যান্য শহর থেকেও অনুভূত হয়।