প্রথমার্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের গোল উৎসব
অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে চোট কাটিয়ে মাঠে নামলেন নেইমার। অবশ্য আগের ম্যাচে সতীর্থদের সঙ্গে মাঠে এসে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন। এবার ঘটলো সেই বার্তার প্রতিফলন। মাঠে নেমেই তারকা নেইমার ঝলকে বদলে গেল দল। তাতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধেই ব্রাজিল পেল ৪-০ গোলের ব্যবধান।
সোমবার দিবাগত রাত ১টায় কাতারের স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ মাঠে নামে ব্রাজিল-দক্ষিণ কোরিয়া। কাতার বিশ্বকাপে দ. কোরিয়া দ্বিতীয় পর্বে এসেছে মাত্র একটি ম্যাচ জিতে। তবে প্রথম ম্যাচে তাঁরা উরুগুয়ের বিপক্ষে গোল শূন্য ড্র করেছিল। আর ব্রাজিল প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেলেও গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল।
নক আউট পর্বে মাঠে নেমেই ব্রাজিলকে চাঙ্গা মনে হচ্ছিল। গ্রুপ পর্বের ব্রাজিল থেকে আলাদা এক আভাস পাওয়া যাচ্ছিল দ্বিতীয় পর্বে। সেই আভাসের বাস্তবায়ন ঘটেছে ৬ মিনিটেই। রাফিনহা অসাধারণ দক্ষতায় কোরিয়ার রক্ষণভাগকে পরাস্ত করে বল দেন বাঁ প্রান্তে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে। ভিনি বল পেয়ে পজিশন ঠিক করে উড়িয়ে মারলেন গোলে। অমনি শুরু হলো উদযাপন। এই উদযাপন নতুন দেখলো কাতার বিশ্বকাপ। সতীর্থরা কাঁধে হাত দিয়ে গোল হয়ে একসঙ্গে পা দুলিয়ে উদযাপন। যেন ফুটবল মাঠে সাম্বার ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দিল নেইমার শিবির। ব্রাজিল এগিয়ে গেল ১-০ গোলে।
কিছুক্ষণ পরে শাপে বর পেল ব্রাজিল। ১০ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার ডি-বক্সের মধ্যে রিচার্লিসনকে ফাউল করে বসেন কোরিয়ার জং উ-ইয়ং। তাতে পেনাল্টি পায় সেলেসাওরা। নিজের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পেনাল্টি শুট করলেন নেইমার। বলের ধাক্কায় কেঁপে ওঠে দ. কোরিয়ার জাল। কানের দুইপাশে হাত উচিয়ে খানিকটা জিহ্বা বের করে উদযাপন করলেন নেইমার। ব্রাজিল পেল ২-০ গোলের লিড।
দুই গোল হজম করে নেইমার হয়তো সতীর্থদের বললেন, আস্তে বন্ধুগণ রাস্তা অনেক বাকি! কিছুটা আক্রমণের জোর কমিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলো ব্রাজিল শিবির। সেই মুহূর্তে আক্রমণ করলো দ. কোরিয়া। ১৬ মিনিটে কোরিয়ান স্ট্রাইকার হোয়াং হি-চ্যানের বলটি লাফিয়ে গোলমুখ থেকে সরিয়ে দিলেন অ্যালিসন। তাতে গোল বঞ্চিত হলো কোরিয়া। এ সময় আরও কয়েকবার আক্রমণে নামে তারা, ফল গোলহীন।
২৮ মিনিটে ব্রাজিল পায় তৃতীয় গোলের দেখা। রিচার্লিসন কোরিয়ার রক্ষণ থেকে যে কৌশলে বল দখল সতীর্থকে দিলেন তাকেই হয়তো ফুটবল শৈলী বলে। থিয়াগো সিলভার সহায়তা নিয়ে জালে বল ঢোকানোর দায়িত্ব নিলেন রিচার্লিসন নিজেই। তাতে দল পেল ৩-০ গোলের লিড।
ব্রাজিলের বিপক্ষে অসহায় মনে হচ্ছিল দক্ষিণ কোরিয়াকে। সেই অসহায়ত্ব আরও বাড়িয়ে দিলেন লুকাস পাকেতা। ৩৫ মিনিটে ভিনিসিয়াসের ক্রসে গোল করেন পাকেতা। ব্রাজিল পেল ৪-০ গোলের লিড।
চারটি গোল হজম করে দিশাহারা অবস্থায় পড়েন কোরিয়ানরা। গ্যালারি ভর্তি কোরিয়ান সমর্থকেরা তখন নির্বিকার পলকে বারবার কল্পনাতে ফিরছিলেন। সেই মুহূর্তে বাজে প্রথমার্ধের বাঁশি। বিরতিতে যাওয়ার আগে ব্রাজিল এগিয়ে থাকল ৪-০ গোলে।