ফের রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হলেন কার্লো আনচেলত্তি
জিনেদিন জিদানের অধীনে ট্রফিহীন এক মৌসুম কাটিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ব্যর্থতায় ঘেরা মৌসুম শেষে জিদান নিজেও আর থাকতে চাইলেন না রিয়ালে। স্প্যানিশ ক্লাবটির দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন নিজ থেকেই। তাঁর বদলে রিয়ালের কোচ হয়ে ফিরলেন সাবেক কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ইতালিয়ান এই কোচের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করেছে রিয়াল।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে আনচেলত্তিকে কোচ হিসেবে ঘোষণা দেয় রিয়াল মাদ্রিদ। এর আগে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রিয়ালের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
কোচ হিসেবে আগেও সফল ছিলেন আনচেলত্তি। স্প্যানিশ ক্লাবটির হয়ে প্রথম দফায় দায়িত্ব পেয়ে ১১৯ ম্যাচের মধ্যে ৮৯টিতে জিতেছিলেন তিনি। তাই এবার কোচ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা অনেকের মধ্যে সাবেক এই ম্যানেজারেই ভরসা রাখল রিয়াল মাদ্রিদ।
অন্যদিকে লম্বা চিঠিতে ফরাসি কোচ জিদান জানিয়ে দিলেন, কেন প্রিয় ক্লাব রিয়াল ছাড়ছেন তিনি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএসকে এক চিঠির মাধ্যমে জিদান জানিয়েছেন, ক্লাব তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না বলেই নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
চিঠিতে ফরাসি কোচ লিখেছেন, ‘প্রিয় রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরা, আজ থেকে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে যখন সাদা জার্সিতে আমি রিয়ালে পা রাখি, তখন থেকে আপনারা আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন। আমি সবচেয়ে সেরা ক্লাবের খেলোয়াড় ও কোচ হওয়ার সম্মান পেয়েছি। এ ছাড়া আমি নিজেও রিয়ালের একজন ভক্ত। এই কারণে আপনাদের উদ্দেশে চিঠিটি লিখলাম আপনাদের বিদায় জানাতে এবং আমার কোচিংয়ের চাকরি ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে।
এরপর জিদান কারণ ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ‘২০১৮ সালের মে মাসে ক্লাব ছেড়েছিলাম। কারণ, তখন আমার মনে হয়েছিল, আড়াই বছরের সাফল্য এবং এতগুলো শিরোপার পর দলকে উদ্বুদ্ধ করতে নতুন কাউকে দরকার। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার আমি ক্লাব ছাড়ছি, কারণ ক্লাব আমার ওপর সেভাবে আস্থা রাখতে পারছিল না। একটি নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে যেমন সমর্থন দরকার, সেটি আমি পাচ্ছিলাম না রিয়ালের কাছ থেকে। আমি ফুটবল বুঝি। বুঝি রিয়ালের কী কী দরকার। আমি জানি, যখন জেতা যায় না, তখন সরে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু এখানে আমার অর্জনগুলোকে ভুলে যাওয়া হয়েছে।’
ফরাসি তারকা আরও লিখেছেন, ‘প্রতিদিন ক্লাবের প্রত্যেকের সঙ্গে আমি সম্পর্ক গড়ে তুলেছি। আমি জন্মেছি জেতার জন্যই। এখানে এসেছিলাম শিরোপা জেতার জন্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও মানুষ, জীবন ও আবেগের মতো বেশ কিছু জিনিস থাকে, যেগুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। কোনো না কোনোভাবে আমার ঘাড়ে দোষ চাপানোর একটা প্রবণতা দেখেছি। আমরা সবাই মিলে এখানে যে সাফল্য অর্জন করেছি, আমি সবার চোখে শুধু সম্মানের দৃষ্টিটাই দেখতে চেয়েছিলাম।’
এ ছাড়া ক্লাবের কর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন জিদান। শেষে লিখেছেন, ‘অবশ্যই আমি এখন আর বিশ্বের সেরা কোচ নই। তবে আমি খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফের সদস্য বা যেকোনো কর্মচারীই হোক না কেন, তাদের কাজের প্রতি তাদের যে শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস দরকার তা সবাইকে দিতে সক্ষম হয়েছি।’