বাংলাদেশকে উড়িয়ে সিরিজ জিতল পাকিস্তান
ব্যাটিংয়ে হতাশ করেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি মোটেও। গুঁটিয়ে গেছে মাত্র ১০৮ রানে। এই রান টপকে জয় পেতে একেবারেই বেগ পেতে হয়নি পাকিস্তানকে। বাংলাদেশকে সহজেই হারিয়েছে বাবর আজমের দল। আট উইকেটের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিয়েছে পাকিস্তান।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটিতে জিতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আগামী সোমবার ফের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
আজ শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০৮ রান গড়ে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
১০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। যদিও রান তাড়ায় শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল সফরকারীরা। এই ম্যাচেও টিকতে পারেননি পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মুস্তাফিজের করা অফ স্টাম্পের বাইরে বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালান বাবর। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্পে আঘাত করে বল। বাবর ফিরে যান ১ রান।
অবশ্য বাবর ফিরলেও জয় পেতে সমস্যা হয়নি পাকিস্তানের। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামানের ব্যাটে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। ৩৯ রান করেন রিজওয়ান। ৫৭ রান করেন ফখর জামান। শেষ দিকে হায়দার আলী করেন ৬ রান।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। বরাবরের মতো হতাশ করেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও সাইফ হাসান। গতকাল অভিষেকে ব্যর্থ হওয়া সাইফকে আজও সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না তিনি।
প্রথম ওভারেই পাকিস্তানের একাদশে ফেরা শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হন সাইফ। আফ্রিদির ফুল লেংথ বল পিচ করে ভেতরে ঢোকে। ওই গতি আর মুভমেন্টের জবাব দেননি সাইফ। কিন্তু বল লাগে প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে আবেদন তোলে পাকিস্তান। প্রথমে পাকিস্তানের আবেদন সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে সফল হয় পাকিস্তান। গোল্ডেন ডাকে ফিরে যান সাইফ।
উইকেটে ধুঁকতে থাকা নাঈমও পারলেন না থিতু হতে। পরের ওভারেই তাঁকে ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ৮ বলে ২ রানে ফেরেন নাঈম।
দ্রুত ওপেনারদের হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু আফিফ উইকেটে আসলেই ঘটে যায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পাকিস্তানি পেসার আফ্রিদির বল ডিফেন্স করেন আফিফ। কিন্তু বোলার আফ্রিদি নিজের বলটি হাতে নিয়েই আফিফ দাঁড়িয়ে থাকা ক্রিজের স্টাম্পে খুব জোরে থ্রো করে বসেন। অথচ তখন ক্রিজ থেকেই বের হননি আফিফ। আফ্রিদির থ্রো করা বল তাঁর পায়ে লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ক্রিজেই পড়ে যান আফিফ। পরে বাংলাদেশের ফিজিও মাঠে ঢুকে শুশ্রূষা করে আফিফকে সুস্থ করে তোলেন।
উঠে দাঁড়িয়ে ২১ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। নবম ওভারে শাদাব খানের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশি এই ব্যাটসম্যান। ৪৬ রানে ভাঙে বাংলাদেশের তৃতীয় জুটি।
আফিফ ফিরলে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন শান্ত। সেই জুটি বেশি লম্বা হয়নি। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে ২৮ রানে ভাঙে ওই জুটি। ১৫ বলে ১২ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাহমুদউল্লাহ ফেরার পরপরই উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন শান্ত। শাদাব খানের বলে ক্যাচ তুলে দেওয়া শান্ত করেন ৪০ রান। ৩৪ বলে তাঁর ইনিংসে আছে পাঁচটি বাউন্ডারি।
আফিফ-শান্ত ফেরার পর রানের গতি কমে যায় বাংলাদেশের। শেষ দিকে নুরুল-আমিনুলদের ব্যাটে চড়ে নির্ধারিত ওভারে ১০৮ রান করে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১০৮/৭ ( নাঈম ২, সাইফ ০, শান্ত ৪০, আফিফ ২০, মাহমুদউল্লাহ ১২, নুরুল ১১, মেহেদী ৩, আমিনুল ৮, তাসকিন ২ ; শাদাব ৪-০-২২-২, আফ্রিদি ৪-০-১৫-২, ওয়াসিম ৩-০-৯-১, রওফ ৩-০-১৩-১, মালিক ২-০-১৬-২, নেওয়াজ ৪-০-২৫-১)।
পাকিস্তান : ১৮.১ ওভারে ১০৯/২ (বাবর ১, রিজওয়ান ৩৯, ফখর ৫৭, হায়দার ৬; মেহেদী ৪-০-২৩-০, তাসকিন ৪-০-২২-০, মুস্তাফিজ ২.১-০-১২-১,আমিনুল ৪-০-৩০-১, শরিফুল ১.৫-০-১০-০)।
ফল : ৮ উইকেটে জয়ী পাকিস্তান।
সিরিজ : ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান