বাংলাদেশকে লজ্জায় ডুবিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল ভারত
সাগরিকায় দুপুর বেলায় এক চিলতে রোদের হাসি। আগেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশও কি রোদমাখা হাসি দেয়নি? চট্টগ্রাম বরাবরই বাঙালির জন্য শাপেবর। ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার খায়েশ বোধহয় সেখান থেকেই আসা। কিন্তু হায়, আহত বাঘের মতো বাংলার বাঘেদের তুলোধুনো করলো ভারতীয় ব্যাটাররা। ভারতের করা ৪০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ থেমে যায় ১৮২ রানে। হার মানে ২২৭ রানের বড় ব্যবধানে।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে দলীয় ১৫ রানে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে শিখর ধাওয়ানের উইকেট হারায় ভারত। দর্শকরা হয়তো স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। ঘণ্টা তিনেক পর সেটি দুঃস্বপ্নে পরিণত। দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে ৩০৫ রানে! বাংলাদেশের পুরো বোলিং লাইনআপ মিলেও ভাঙতে পারেনি ঈষাণ কিশান ও বিরাট কোহলিকে।
সাকিব আল হাসানের বলে মিরাজের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে বিরাট কোহলি শতক তুলে নেন। ৯১ বলে করেন ১১৩ রান। বিরাটের সেঞ্চুরি করা বিরাট কিছু নয়। যা বিরাট তা হলো, ঈষাণ কিশানের ইনিংস। বাংলাদেশের বোলাররা ঘুমের মধ্যেও হয়তো বহুদিন ভয় পাবে এমন বিধ্বংসী ইনিংস মনে করে। ১৩১ বলে ২১০ রান করেন। ২৪টি চার ও ১০টি ছয়ের মারে গড়া ইনিংস থামে তাসকিন আহমেদের বলে লিটন দাসের তালুবন্দি হয়ে।
এরপর নিয়মিত উইকেট হারায় ভারত। তবে সর্বনাশ যা হওয়ার আগেই হয়ে গেছে। ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৪০৯ রানে তোলে ভারত। বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১০ রান। অসম্ভবের চেয়েও বেশিকিছু। সেটি তাড়া করতে নেমে ৩৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। এনামুল হক বিজয় আউট হওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব করেন সর্বোচ্চ ৪৩ রান। লিটনের সংগ্রহ ২৯। প্রতিরোধ গড়তে পারেনি কেউই। ম্যাচ যে আগেই হাতছাড়া হয়ে গেল। ফলে ৩৪ ওভারে মাত্র ১৮২ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন সাকিব, তাসকিন ও ইবাদত। ভারতের পক্ষে তিন উইকেট শিকার করেন শার্দুল ঠাকুর। দুটি উইকেট ঝুলিতে পুরেন অক্ষর প্যাটেল ও উমরান মালিক।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ। তবে শেষ ম্যাচের এমন লজ্জা যেন সিরিজে চাঁদের কলঙ্ক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ৫০ ওভারে ৪০৯/৮ (শিখর ৩, কিশান ২১০, কোহলি ১১৩, শ্রেয়াস ৩, রাহুল ৮, সুন্দর ৩৭, অক্ষর ২০, শার্দুল ৩, কুলদীপ ৩; তাসকিন ৯-১-৮৯-২, মুস্তাফিজ ১০-০-৬৬-১, মিরাজ ১০-০-৭৬-১, ইবাদত ৯-০-৮০-২, সাকিব ১০-০-৬৮-২, আফিফ ১-০-১৪-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১১-০)।
বাংলাদেশ : ৩৪ ওভারে ১৮২ (এননামুল ৮, লিটন ২৯, সাকিব ৪৩, মুশফিক ৭, ইয়াসির ২৫, মাহমুদউল্লাহ ২০, আফিফ ৮, মিরাজ ৩, তাসকিন ১৭, মুস্তাফিজ ১৩; সিরাজ ৫-০-২৭-১, শার্দুল ৫-০-৩০-৩, অক্ষর ৫-০-২২-২, উমরান ৮-৯-৪৩-২, কুলদীপ ১০-১-৫৩-১, সুন্দর ১-০-২-১)।
ফল : ভারত ২২৭ রানে জয়ী।