বেঙ্গালুরুকে উড়িয়ে কলকাতার স্বস্তির জয়
ঘরের মাঠে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের উপস্থিতিতে যেন উজ্জ্বীবিত হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাবের সাথে বৃষ্টি আইনের হারের স্বাদ পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে কেকেআর। কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে তুলে নিয়েছে চলতি আসরে নিজেদের প্রথম জয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ইডেন গার্ডেনে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২০৪ রান তোলে কলকাতা। জবাবে সব উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানে থামে আরসিবি। যার সুবাদে ৮১ রানের জয় পায় কেকেআর।
ঘরের মাঠে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল কলকাতার দুই ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। যদিও তাদের ওপেনিং জুটি খুব বেশি বড় হয়নি। দলীয় ২৬ রানে ইংলিশ পেসার ডেভিড উইলির বলে শুরুতে আইয়ার ও পরের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মানদিপ সিং। আইয়ার ৩ ও শূন্য রানে আউট হন মানদিপ। দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে কেকেআর। এরপর অধিনায়ক নিতিশ রানাকে সঙ্গী করে সেই চাপ সামালের চেষ্টা করেন গুরবাজ। দলীয় ৪৭ রানে রানার বিদায়ে চাপ আরও বাড়ে কলকাতার। তবে রিঙ্কু সিং এসে ভালোভাবে সামাল দেন সেই চাপ। গুরবাজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ৪২ রানের জুটি।
দলীয় ৮৯ রানে কারান শর্মার বলে আকাশদিপের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গুরবাজ। তবে আউট হওয়ার আগে গুরবাজ খেলেন ৪৪ বলে ৫৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। গুরবাজের আউটের পরের বলেই রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান ক্যারিবীয় তারকা ব্যাটার আন্দ্রে রাসেল। তার বিদায়ের পর শারদুল ঠাকুরকে নিয়ে অবিশ্বাস্য জুটি গড়ে তোলেন রিঙ্কু। এই দুইজনের ১০৩ রানের জুটিতে পাহাড়সম সংগ্রহের ভিত পায় কলকাতা। দলীয় ১৯২ রানের ৩৩ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন রিঙ্কু।
এরপর বাকি কাজটা সারেন শারদুল। মূলত তার ২৯ বলে ৬৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করেই স্কোরবোর্ডে এত বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় কেকেআর। শেষমেষ ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২০৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় কলকাতা। বেঙ্গালুরুর হয়ে উইলি ও শর্মা ২টি করে উইকেট নেন।
২০৫ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে আরসিবির দুই ব্যাটার বিরাট কোহলি ও ফাফ ডু প্লেসি। মাত্র ৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৪৪ রান তুলে কলকাতাকে শুরুতেই চাপে ফেলে বেঙ্গালুরু। যদিও বেশিক্ষণ নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি কোহলির দল। দলীয় ৪৪ রানের মাথায় সুনিল নারিনের বলে বোল্ড হয়ে কোহলি ফিরলে বড় ধাক্কা খায় বেঙ্গালুরু। ১৮ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ডান হাতি ব্যাটার।
কোহলির বিদায়ের পর দ্রুতই ফিরে যান আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার ডু প্লেসি। ১২ বলে ২৩ রান করে বারুন চক্রবর্তীর বলে বোল্ড আউট হন তিনি। এই দুই ব্যাটারের এমন আচমকা বিদায়ের ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই ১৫ রানের ব্যবধানে আরও ৩ উইকেট হারায় আরসিবি।
সবমিলিয়ে ৬১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় কোহলির দল। তবে ব্যবধান কমানোর কাজটা বেশ ভালোভাবেই করছিল দুই ব্যাটার দিনেশ কার্তিক ও মিচেল ব্রেসওয়েল। তবে তাদের জুটিও খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। দলীয় ৮৩ রানে বিদায় নেন ব্রেসওয়েল।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১২৩ রানের বেশি তুলতে পারেনি আরসিবি। কলকাতার হয়ে নারিন ২টি, বারুন ৪টি ও শর্মা ৩টি উইকেট নিয়েছেন।