‘মুস্তাফিজের জাদুকরী বোলিং ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়’
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তখন অস্ট্রেলিয়ার হাতে। চার ওভারে প্রয়োজন ৩৮ রান, হাতে ৭ উইকেট। আর সেই সময় বল হাতে এলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তাঁর দুটি ওভারে ম্যাচের চিত্রটাই পাল্টে গেল। জিতল বাংলাদেশ, গড়ল ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল লাল-সবুজের দল।
দলের এই সাফল্যে সবচেয়ে বড় অবদান মুস্তাফিজুর রহমানের। তাই কাটার-মাস্টারকে প্রশংসায় ভাসালেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
এদিন মুস্তাফিজ ৪ ওভার বল করে রান খরচ করেছেন মাত্র ৯। ১৭ ও ১৯তম ওভারে বল করে দেন ৫ রান। শেষ ওভারে দেন ১ রান। প্রথম ওভারে খরচ করেন ৩ রান।
এ সম্পর্কে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘মুস্তাফিজের আজ যে স্পেল ছিল, পাঁচ উইকেট পেলে যেমন হয় এর চেয়ে কম কিছু ছিল না। তেমনই একটা স্পেল ছিল এটি। বিশেষ করে ১৯তম ওভারে এসে কেবল একটি রান দেওয়া, পাঁচটা ডট বল করা। অনেক বড় কিছু।‘
বাংলাদেশ অধিনায়ক আরও বলেন, ‘সে দলের জন্য সেরাটা দিয়েছে। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, সে একজন চ্যাম্পিয়ন বোলার। সে বিশ্বমানের একজন বোলার। সে আরও অনেক বছর দেশকে সার্ভিস দেবে, আরও অনেক ম্যাচ জেতাবে।’
মুস্তাফিজ প্রথম ম্যাচে ১৬ রানে ২ উইকেট, পরের ম্যাচে ২৩ রানে তিনটি। তৃতীয় ম্যাচে কোনো উইকেট না পেলেও দলের সাফল্যে মূল অবদান রেখেছেন তিনিই।
সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ১০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ দুই ম্যাচে হাতে রেখেই ৩-০ ব্যবধানে জিতল লাল সবুজের দল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেন নাথান এলিস। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ, মুস্তাফিজ ও মেহেদীকে আউট করে নিজের অভিষেক ম্যাচ হ্যাটট্রিকে রাঙালেন এলিস। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ১১৭ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে অসিদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। তরুণ এই স্পিনারের বল ম্যাথু ওয়েড শরীর ঘুরিয়ে পুল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল লাফিয়ে ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে সহজ ক্যাচ যায় সেই শর্ট ফাইন লেগে। সেখান ছিলেন শরিফুল। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি তিনি। ৫ বলে ১ রান করে আউট ওয়েড। দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটেই শুরুর ধাক্কা সামলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বরাবরের মতো এই ম্যাচেও হাল ধরেন মিচেল মার্শ। দ্বিতীয় উইকেটে ম্যাকডারমোর্টকে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। ওই জুটিতেই মূলত শুক্ত অবস্থান করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
থিতু হওয়া ওই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ১৪তম ওভারে ম্যাকডারমোর্টকে বোল্ড করেন তিনি। দুই ছক্কায় ৪১ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন এই ওপেনার।
সতীর্থ ফিরলেও উইকেটে থিতু হয়ে ছিলেন মার্শ। ৪৫ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তবে হাফসেঞ্চুরির পর বেশিদূর যেতে পারলেন না। পরের ওভারেই তাঁকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল। ৪৭ বলে ৫১ রান করে আউট হন মার্শ। অভিজ্ঞ মার্শ ফিরলে শেষ দিকে ১১৭ রানে থামে অসিরা।