যে কারণে শচীনকে একদিন আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেন লতা
কোভিডে আক্রান্ত হয়ে প্রায় চার সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। তাঁর মৃত্যুতে ভারতের সংগীত জগত থেকে শুরু করে ক্রীড়া জগতেও শোক নেমেছে।
সংগীত জগতের পাশাপাশি ক্রীড়া জগতেও বিশেষ ছিলেন লতা মঙ্গেশকর। ক্রিকেটের প্রতি লতার ভালবাসার কথা কারো অজানা নয়। বিশেষ করে ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারকে নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসতেন। প্রায় সাক্ষাৎকারে কথা বলতেন শচীনকে নিয়ে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, শচীনকে ছেলের মতো স্নেহ করলেও তাঁর জন্মদিনের দিন পাশে থাকতে পারতেন না লতা মঙ্গেশকর। কেন পারতেন না সেই কারণও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী।
এক বার সংবাদমাধ্যমে লতা মঙ্গেশকর বলেছিলেন, ‘শচীনের জন্মদিন ২৪ এপ্রিল। ওই দিন আমার বাবা (দীননাথ মঙ্গেশকর)-র মৃত্যুবার্ষিকী। ফলে ওই দিনটিতে আমাদের কখনোই দেখা হয়নি। এক বার তো আমরা ২৩ এপ্রিল দেখা করেছিলাম।’
অনেক সাক্ষাৎকারেই শচীনকে ‘ভারতরত্ন’ বলে উল্লেখ করতেন লতা মঙ্গেশকর। শচীনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে কতখানি আন্তরিক ছিল সেটি জানিয়ে লতা বলেছিলেন, ‘শচীন আমাকে মায়ের মতোই ভালবাসে। আমিও মায়ের মতোই ওর জন্য প্রার্থনা করি। প্রথম যে দিন আমাকে মা বলে ডেকেছিল সে দিনটি কখনও ভুলব না। আমারও মনে হয়েছিল, ওর মতো ছেলে পাওয়া সৌভাগ্য।’
গত কয়েক দশক ধরে ভারতীয় উপমহাদেশের সংগীতভক্তদের সুরের মায়ায় বেঁধে রেখেছিলেন কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকর। আজ শনিবার সকালে এই সুরের মায়া ত্যাগ করে বিদায় নিলেন তিনি। লতা মঙ্গেশকর আজ ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ১২ মিনিটে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ৯২ বছর বয়সে স্বজনসহ অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।
বাংলা গানে তুমুল জনপ্রিয় লতা মঙ্গেশকর। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে সংগীতে ক্যারিয়ার শুরু করেন লতা মঙ্গেশকর। ৭০ বছরের ক্যারিয়ারে ৩০ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কিংবদন্তি এ শিল্পী।