লিটন-রনির ওপেনিংয়ে কাটছে পুরনো হতাশা
বাংলাদেশের ক্রিকেটে চিরকালীন আক্ষেপের আরেক নাম ওপেনিং জুটি। ফরম্যাট যেমনই হোক, ওপেনাররা নিজেদের ঠিক প্রমাণ করতে পারছিলেন না। তামিম ইকবাল বহুদিন একা একা চলেছেন। টি-টোয়েন্টিতে এখন তামিম নেই। লিটন দাসও প্রায় নিঃসঙ্গ সময়ই কাটিয়েছেন, অন্তত গত দুই বছরে। সময় বদলেছে এখন। আগের চেয়ে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ দল। মানসিক চিন্তায় এসেছে বড়সড় পরিবর্তন।
ওপেনিংয়ে লিটন দাস ও রনি তালুকদার মিলে উপহার দিচ্ছেন দারুণ সব মুহূর্ত। অথচ ওদের রসায়ন মাত্র ৫ ম্যাচের। দেখে বোঝারই উপায় নেই। এই ৫ ম্যাচেই গড়ে ফেলেছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৬ ওভারে ৮১ রান তোলে বাংলাদেশ। দুই প্রান্ত থেকে একে অপরকে সাহায্য করেন বলে ভালো শুরু এনে দিতে পারছেন দেশকে। পাশাপাশি নিজেরাও ছাড়িয়ে যাচ্ছেন নিজেদের। আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে রনি ২৪ বলে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৮ বলে অর্ধশতক তুলে লিটন করেন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড।
গত দুই বছরে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি খেলেছে ৫২ টি। এ সময়ে ওপেনিং জুটিতে বদল এসেছে ১৮ বার। মনে হচ্ছে, পরীক্ষা নিরীক্ষার সময়টা শেষ হতে চললো। এই প্রসঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে লিটন যেমন বলেন, ‘যেভাবে আমরা শুরুটা করছি, এরচেয়ে বড় কিছু তো হতে পারে না। প্রতি ম্যাচেই আপনি সাফল্য পাবেন না। ব্যাপারটা এমন না যে দুইজন মাঠে যাব আর হিট করব। খারাপ সময়ও আসবে। তবে রনির সঙ্গে ব্যাটিং করে অনেক মজা পাচ্ছি।’
রনি আর লিটন দুইজনেরই অভিষেক হয় ২০১৫ সালে। এরপর পেরিয়েছে আট বছর। লিটন নিজের জায়গা পাকা করে নিলেও রনি ছিটকে গিয়েছিলেন। ফিরে এসেছেন আবার। জুটি গড়েছেন লিটনের সঙ্গে। এর পেছনের রহস্যটা জানালেন রনি, ‘আমরা বল বাই বল খেলার চেষ্টা করি। দুজন বলের মেরিট অনুযায়ী সঠিক শটটা খেলার চেষ্টা করি। আমরা যদি স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে পারি, যদি ইতিবাচকতা ধরে রাখতে পারি তাহলে ভালো কিছু হবে।’
দল থেকে বাদ পড়লেও নিজেকে পরিণত করে ফিরে এসেছেন রনি তালুকদার। লিটন দাস তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠেছেন দেশের অন্যতম ভরসা। দুইজনকে নিজেদের খেলাটা খেলার স্বাধীনতা দিচ্ছে দল। নির্ভার হয়ে তাই হাত খুলে খেলতে পারছেন তারা। যার সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন বুনছে বড় সম্ভাবনার।