সাগরিকায় লজ্জায় ডুবল বাংলাদেশ
দিনের শুরুতেই শেষ, এই হলো চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের শেষ দিন। খেলা পঞ্চম দিনে গড়ালেও তা কেবল আনুষ্ঠানিকতাই ছিল। ১২ ওভারও পার করতে পারেনি, তার মধ্যে হাতে থাকা ৪টি উইকেট পড়ে গেল। জয়ের জন্য ২৪১ রান তো দূরের কথা। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে ৩২৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১৮৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে ভারত। প্রাপ্তির মধ্যে চতুর্থ ইনিংসে অভিষিক্ত জাকির হাসানের সেঞ্চুরি।
আজ রোববার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা শুরু হয়। জয়ের লক্ষ্যে সাকিবদের দরকার ছিল ২৪১ রান। পঞ্চম দিনে কেবল ৫২ রান তুলতে পারে সাকিবের দল। তাতে সাজঘরে ফেরে হাতে থাকা ৪ উইকেট। আর প্রথম টেস্ট জিতে দুই ম্যাচে ১-০ তে এগিয়ে গেল ভারত।
গত ১৪ ডিসেম্বর টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। প্রথম ইনিংসে তাঁরা ১০ উইকেটে ৪০৪ রান করে। জবাবে বাংলাদেশ সব উইকেট হারিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৫০ রান করে। তাতে ২৫৪ রানে পিছিয়ে থেকে ফলোঅনে পড়ে সাকিবের দল।
তবে বাংলাদেশকে ফলোঅন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত। দুই সেঞ্চুরিতে তাঁরা করে ২৫৮ রান। ১৫২ বলে ১১০ রান করে ভারতীয় ওপেনার শুবমান গিল আউট হন। তবে ১৩০ বল থেকে অপরাজিত ১০২ রান করেন চেতেশ্বর পূজারা। এর মধ্যে বাংলাদেশের সফলতা মাত্র ২ উইকেট। সাকিবদের সামনে মোট লিড দাঁড়ায় ৫১৩ রানের। এরপর ডিক্লেয়ার করে ভারতের ইনিংস।
৫১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে জমা করতে পারে ৪২ রান। চতুর্থ দিনেও ভালো শুরু করে উদ্বোধনী জুটি। দলীয় ১২৪ রানে জুটি ভাঙেন উমেশ যাদব। উমেশের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত (৬৭)। এরপর থেকে উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিল শুরু হয় সাকিবদের। শেষ পর্যন্ত ৩২৪ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। ভারত জয় পায় ১৮৮ রানের।
চার ইনিংসের মধ্যে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে গেলে মোটাদাগে আসে, অভিষিক্ত জাকির হাসানের সেঞ্চুরি। ২২৪ বলে ১২ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় শতরান করেন তিনি। ওপেনিংয়ে নামা জাকির সেঞ্চুরি করে পরের বলেই আউট হন। অবশ্য জাকিরের রানে চট্টগ্রাম টেস্টে টিকে থাকার স্বপ্ন দেখছিল সাকিবের দল। তবে অশ্বিনের বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে জাকিরের আউটে সে আশা ক্ষীণ হতে থাকে। সাকিব ১০৮ বলে ৮৪ রান করে কুলদীপের বলে আউট হলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করতে বেশি সময় লাগেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
প্রথম ইনিংসে ভারত : ১৩৩.৫ ওভারে ৪০৪/১০ (লোকেশ ২২, শুবমান গিল ২০, চেতেশ্বর পুজারা ৯০, বিরাট ১, পান্ত ৪৬, অক্ষর ১৪, শ্রেয়াস আইয়ার ৮৬, অশ্বিন ৫৮, কুলদীপ ৪০; মিরাজ ৩১.৫-৬-১১২-৪, তাইজুল ৪৬-১০-১৩৩-৪, ইবাদত ২১-২-৭০-১, খালেদ ২০-৩-৪৩-১, সাকিব ১২-৪-২৬-০, ইয়াসির ১-০-৭-০, শান্ত ২-০-৭-০)।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ : ৫৫.৫ ওভারে ১৫০/১০ (শান্ত ০, জাকির ২০, ইয়াসির ৪, মুশফিক ২৮, সাকিব ৩, লিটন ২৪, সোহান ১৬, তাইজুল ০, মিরাজ ২৫, ইবাদত ১৭, খালেদ ০*; কুলদীপ ১৬-৬-৪০-৫, সিরাজ ১৩-২-২০-৩, উমেশ ৮-১-৩৩-১, অশ্বিন ১০-১-৩৪-০, অক্ষর ৮.৫-৪-১০-১)।
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত : ৬১.৪ ওভারে ২৫৮/২ ইনিংস ঘোষণা (রাহুল ২৩, গিল ১১০, পুজারা ১০২*, কোহলি ১৯*; খালেদ ১৩-০-৫১-১, তাইজুল ২৩.৪-৩-৭১-০, মিরাজ ১৪-১-৮২-০, ইয়াসির ৬-০-২৮-০, লিটন ২-০-১৩-০, শান্ত ৩-০-১২-০)।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ : ১১৩.২ ওভারে ৩২৪/১০ (শান্ত ৬৭, জাকির ১০০, ইয়াসির ৫, মুশফিক ২৩, সাকিব ৮৪, লিটন ১৯, সোহান ৩, তাইজুল ৪, মিরাজ ১৩, ইবাদত ০, খালেদ ০*; কুলদীপ ২০-৩-৭৩-৩, সিরাজ ১৯-৪-৬৭-১, উমেশ ১৫-৩-২৭-১, অশ্বিন ২৭-৩-৭৫-১, অক্ষর ৩২.২-১০-৭৭-৪)।
ফল: ১৮৮ রানে জয়ী ভারত।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কুলদীপ যাদব।