হ্যাটট্রিকের আনন্দে রোনালদোর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফর্ম নিয়ে আলোচনা চলছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাঁকে ছেড়ে দেবে কি না, তা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। সব সমালোচনার জবাব যেন একসঙ্গে দিলেন ‘সিআরসেভেন’। আরেকবার জ্বলে উঠে রোনালদো বুঝিয়ে দিলেন তাঁর সৌরভ এখনও ফুরিয়ে যায়নি। বয়সের সংখ্যাটিকে তুড়ি মেরে কাল ওল্ড ট্র্যাফোর্ড হ্যাটট্রিক দিয়ে রাঙালেন তিনি। হ্যাটট্রিকময় ম্যাচ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত পাঁচ বারের বর্ষসেরা এ ফুটবলার।
গতরাতে মূলত ম্যানইউকে উদ্ধার করেন রোনালদো। দলের তিনটি গোলই তিনি করেন। ম্যাচের প্রধমার্ধে পরপর দুবার এগিয়ে গিয়ে ম্যাচ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। সেখান থেকে দলকে রক্ষা করলেন চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তাঁর হ্যাটট্রিকে টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চলতি লিগের পয়েন্ট টেবিলে সেরা চারে ফিরল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হ্যাটট্রিক নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানালেন রোনালদো। কয়েকটি ছবি পোস্ট করে সঙ্গে লিখেছেন, ‘ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফেরার পর আমার প্রথম হ্যাটট্রিকে আমি খুব খুশি। মাঠে নেমে গোল করা ও দলকে সহায়তার চেষ্টা করার অনুভূতির কোনো তুলনা হয় না। আমরা আবারও প্রমাণ করেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি এবং একতাবদ্ধ থাকতে পারছি, নিজেদের দিনে যেকোনো দলকে হারাতে পারি আমরা। ম্যানইউ কোনো সীমায় আবদ্ধ নয়। যতকিছুই হোক, এগিয়ে চলো!’
হ্যাটট্রিক গড়ার ম্যাচে ইতিহাসও গড়লেন এ সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার। গতকালের ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করার পথেই ইতিহাস গড়েন রোনালদো। ওই গোল করার মাধ্যমে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলিয়ে রোনালদোর গোল সংখ্যা হয় ৮০৬টি, যা ফুটবল ইতিহাসে ক্যারিয়ার গোলের হিসাবে সবচেয়ে বেশি। অবশ্য আগেই এগিয়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু, ক্লাব ও জাতীয় দল মিলে কিছুটা বিতর্ক ছিল। এবার কোনো বিতর্ককে আর জায়গা দিলেন না রোনালদো। সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।
আনঅফিসিয়াল পরিসংখ্যানবিদদের সংগঠন ‘আরএসএসএসএফ’-এর হিসাব অনুযায়ী, অস্ট্রিয়ার সাবেক স্ট্রাইকার ইয়োসেফ বিকানের গোল ৮০৫টি। কাল রোনালদো ম্যানইউর জার্সিতে দ্বিতীয় গোলটি করে সেটা ছাড়িয়ে যান। এরপর হ্যাটট্রিক করে সংখ্যাটা বাড়িয়ে নেন ৮০৭ গোলে।
এ ছাড়া সাঁইত্রিশ বা এর বেশি বয়সি তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে এক ম্যাচে একাধিক গোল করলেন রোনালদো। আগের দুজন করেছিলেন। তাঁদের একজন টেডি শেরিংহাম (একবার), অন্যজন গ্রাহাম আলেকজান্ডার (দুবার)।