সাকিব-সৌম্যদের টেস্ট শেখালেন রাব্বি!
টেস্ট খেলার জন্য যে ধৈর্য দরকার, সেটা যেন এখনো নেই বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাটসম্যানের। সবারই যেন থাকে দ্রুত রান সংগ্রহের তাড়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান দ্বিতীয় টেস্টে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ রানের ইনিংসটি এসেছে সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। তাঁর স্ট্রাইক রেট ৮২.৬৯। আরেকটি অর্ধশতকের ইনিংস খেলা সাকিব আল হাসানের স্ট্রাইক রেট ছিল ৭৫.৬৪। ৬৭তম ওভারে বাংলাদেশের অষ্টম উইকেট পতনের পর অনেকেরই হয়তো মনে হয়েছিল, আর কয়েক ওভারের মধ্যেই গুটিয়ে যাবে বাংলাদেশের ইনিংস। কিন্তু নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি যেন সাকিব-সৌম্যদের দেখিয়ে দিলেন, কীভাবে টেস্ট খেলতে হয়। রাব্বির অপরিসীম ধৈর্যের কারণেই প্রথম ইনিংসটা দিনের শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পেরেছে বাংলাদেশ।
স্কোরবোর্ডে রাব্বির নামের পাশে জমা হয়েছে মাত্র দুই রান। কিন্তু এই দুটি রান সংগ্রহের জন্য তিনি খেলেছেন ৬৩টি বল। ওয়াগনার, সাউদি, বোল্টরা একের পর এক বাউন্সার ছুড়ে দিয়েছেন রাব্বির দিকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই বিচলিত হননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। একের পর এক বল ঠেকিয়ে লম্বা করেছেন বাংলাদেশের ইনিংসটা। অপর প্রান্তে রান সংগ্রহের সুযোগ করে দিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান ও রুবেল হোসেনকে। ৬৭তম ওভারে অষ্টম উইকেটটি হারানোর পর বাংলাদেশ যে দিনের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতে পেরেছে তার প্রায় পুরো কৃতিত্বটিই রাব্বির এই অসাধারণ ধৈর্যশীল ইনিংসটির।
৬৭তম ওভারে তাসকিন আহমেদ যখন আউট হন, তখন দলের সংগ্রহ ছিল ২৫৭। আর শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৮৯ রান। শেষ দুই উইকেটে ৩২টি মূল্যবান রান জমা হওয়াও কিন্তু বাংলাদেশের বিচারে খুব একটা ফেলনা নয়। নবম উইকেটে নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে রাব্বি বেঁধেছিলেন ১৬ রানের জুটি। এ দুজন খেলেছিলেন ১১ ওভার। ৪৭ রান করে সোহান আউট হয়ে যাওয়ার পরও সাত ওভার ব্যাটিং করেছেন শেষ দুই ব্যাটসম্যান রুবেল ও রাব্বি। এই শেষ উইকেট জুটি থেকেও এসেছে ১৬ রান। শেষ পর্যন্ত ৬৩ বলে ২ রান করে রাব্বি হার মেনেছেন সাউদির এক দুর্দান্ত ডেলিভারির কাছে। পড়েছেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। রুবেল অপরাজিত ছিলেন ১৬ রান করে।
একটা দিক দিয়ে রেকর্ডই করে ফেলেছেন রাব্বি। কারণ, ৬০ বলের বেশি খেলা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এখন তাঁরই স্ট্রাইক রেট সবচেয়ে কম। এর আগে রেকর্ডটি ছিল আশরাফুলের। ২০০১ সালে চট্টগ্রামে ৬০ বল খেলে ৩ রান করেন আশরাফুল। শেষ পর্যন্ত সেই ইনিংসে ১৪৬ বলে ১০ রান করেন সাবেক বাংলাদেশি অধিনায়ক।
বেশি বল খেলে কম রানের রেকর্ডটি নিউজিল্যান্ডের জিওফ অ্যালোটের। ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৭ বল খেলেও কোনো রান নেননি এই বোলার। এ ছাড়া ১৯৬৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩ রান করতে ১০০ বল খেলেন জন মারে। ১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫৯ বলে ১৩ রান করেন ভারতের জশপাল শর্মা। ১৯৫৩ সালে লর্ডসে ২২৩ বল খেলে ২০ রান করেন পাকিস্তানের হানিফ মোহাম্মদ।