টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার যত লড়াই
বাংলাদেশের এবারের শ্রীলঙ্কা সফরটা অন্য সফরগুলোর চেয়ে আলাদা ছিল। শততম টেস্ট ম্যাচ ঘিরে শুরু থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটার-সমর্থকদের মধ্যে আলাদা রকমের একটা আবহ কাজ করেছে। এ ছাড়া এর আগের দলগুলোর তুলনায় এবারের শ্রীলঙ্কা দলটা বেশ অনভিজ্ঞ ছিল। সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনের পরবর্তী যুগে ব্যাটিং স্তম্ভ হয়ে উঠতে পারেননি কেউই। তাই তরুণ এই দলটির বিপক্ষে অভিজ্ঞ বাংলাদেশ ভালো করবে সেই প্রত্যাশা ছিল সবার। হয়েছেও তেমনটিই। টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডেতেও দারুণ লড়াই করেছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের সঙ্গে দুটি সিরিজেই ড্র করেছেন মাশরাফি-মুশফিকরা। এবার লড়াইটা টি-টোয়েন্টির। এ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশে। হেরেছে চারটিতে। আসুন, দেখে নিই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার সেই পাঁচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের চুম্বক অংশ।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭, জোহানেসবার্গ : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর সুখস্মৃতি নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। জোহানেসবার্গে টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। স্পিনাররা ভালোভাবেই আটকে রেখেছিলেন লঙ্কান স্কোরটাকে। ২০ ওভারে মাত্র ১৪৭ রানে লঙ্কানদের আটকে রাখে বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৫.৩ ওভারে মাত্র ৮৩ রানে অলআউট হন আশরাফুল-আফতাবরা।
৩১ মার্চ ২০১৩, পাল্লেকেলে : লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রায় ছয় বছর পর টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামে বাংলাদেশ। পাল্লেকেলের সেই ম্যাচে দুর্দান্ত লড়াই করে টাইগাররা। শাহাদাত-রুবেল-রাজ্জাকদের বেধড়ক পিটিয়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। ৬৪ রান করেন কুশল পেরেরা। জবাবে সাত উইকেটে ১৮১ রান করে বাংলাদেশ। আশরাফুলে ২৭ বলে ৪৩, মুশফিকের ৩৯, মাহমুদউল্লাহর ৩১ রানে ম্যাচটা প্রায় জিতেই নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১৭ রানে হারতে হয় বাংলাদেশকে।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, চট্টগ্রাম : পরের বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রায় জিতেই গিয়েছিল লাল-সবুজের দল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মাত্র দুই রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও টসে জিতে ফিল্ডিং করে বাংলাদেশ। কুশল পেরেরার দারুণ ব্যাটিংয়ে সাত উইকেটে ১৬৮ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে এনামুল হক বিজয়, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের দারুণ ব্যাটিংয়ে জয়ের কাছ থেকে ঘুরে আসে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। এনামুল হক বিজয় দারুণ লড়াই করে সমীকরণটা শেষ বলে তিন রানে নিয়ে আসেন। তবে শেষ বলে এনামুল আউট হয়ে গেলে দুই রানে হারতে হয় বাংলাদেশকে। বিজয় ৫৮, তামিম ৩০ ও সাকিব ২৬ রান করেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, চট্টগ্রাম : দ্বিতীয় ম্যাচে মোটেও লড়াই করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। টস জিতে ব্যাটিং করে ১৯.৫ ওভারে মাত্র ১২০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ২৬ রান করেন সাব্বির রহমান। এ ছাড়া এনামুল হক বিজয় করেন ২৪ রান। তবে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের কাঁপিয়ে দেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। শেষ বলে জয়ের জন্য লঙ্কানদের দরকার ছিল তিন রান। তবে ফরহাদ রেজার শেষ বলে চার মেরে দিনটা নিজেদের করে নেন সেনানায়েকে।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, মিরপুর : গত বছর এশিয়া কাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মিরপুরে ২৩ রানে শ্রীলঙ্কাকে হারায় বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শ্রীলঙ্কাকে ১৪৮ রানের টার্গেট দেন মাশরাফিরা। জবাবে ব্যাট করতে ১২৪ রানেই থেমে যায় শ্রীলঙ্কা।
ব্যাটিংয়ে নেমে ২ রানেই দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে বসা বাংলাদেশ সাব্বিরের নেতৃত্বে পাল্টা আক্রমণ চালায়। মাত্র ৫৪ বলে ৮০ রানের দারুণ ইনিংস খেলে ১৪৮ রানে মোটামুটি সংগ্রহ এনে দেন সাব্বির। জবাবে আল-আমিন ও সাকিবের তোপে ১২৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। লঙ্কানদের হারানোর পর পাকিস্তানিকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ।