এখন আর আক্ষেপ নেই মুস্তাফিজের বাবার
আবুল কাসেম চেয়েছিলেন, ছেলে পড়াশোনা করে বড় চিকিৎসক হবেন। কিন্তু বাবার স্বপ্নের পথে না হেঁটে চলেছেন নিজের পথে। স্কুল পালিয়ে ক্রিকেট খেলতেন, মেতে থাকতেন অনুশীলনে। বাবার কথা না শোনা সেই মুস্তাফিজ ভারতের বিরুদ্ধে অভিষেক ওয়ানডেতেই নিয়েছেন পাঁচ উইকেট; আর দ্বিতীয় ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে গড়েছেন নতুন ইতিহাস।
আবুল কাসেমের আর আক্ষেপ নেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাসেমের এক চিকিৎসক আত্মীয় ফোন করে বলেছেন, ‘চিকিৎসক হয়ে মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারিনি। কিন্তু মুস্তাফিজ এখন বাংলাদেশের সবার অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছে।’
‘আমি পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদিকে খুব ভালো বলতাম। দুর্দান্ত ব্যাটিং করতেন। সেই শহিদ আফ্রিদিকে যখন আমার ছেলে আউট করে দিল, তখন আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম’- যোগ করেন আবুল কাসেম।
সাতক্ষীরা শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে কালীগঞ্জের তারালি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে মুস্তাফিজদের বাড়িটি এখন উৎসবের কেন্দ্রস্থল। বাড়িতে পাড়া-পড়শী, কাছের-দূরের সব শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের ভিড়।
আবুল কাসেম বলেন, ‘স্কুলে তেমন মনোযোগ ছিল না মুস্তাফিজের। ক্রিকেট খেলার খুব ভক্ত ছিল। ক্লাস নাইনে ওঠার পর সে অনেকের নজরে আসে। স্কুলে যাওয়ার নাম করে ক্রিকেট খেলতে যেত। ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হোক। পরে দেখি ভালো খেলছে। প্রিমিয়ার লিগে ডাক পেল। এ রকমই হঠাৎ শুনতে পেলাম টি-টোয়েন্টিতে খেলার সুযোগ পেয়েছে মুস্তাফিজ।’
এখন কেবল হেসেই যাচ্ছেন কাসেম। চোখে-মুখে রাজ্যের প্রশান্তি।
রোববার রাতেও মুস্তাফিজদের বাড়িতে ছিল ভিড়। মুস্তাফিজের ঘরে সাজানো তাঁর অর্জন করা ট্রফিসহ বিভিন্ন পুরস্কার। প্রতিবেশীরা তো বটেই গ্রামের মানুষ আসছে মুস্তাফিজদের বাড়ি দেখার জন্য। মুস্তাফিজ বিদ্যালয়ে মনোযোগী ছিলেন না। কিন্তু মুস্তাফিজের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও চলে এসেছেন তাঁদের বাড়িতে। মুস্তাফিজের কারণে আজ গর্বিত সবাই।