আরও একবার মাশরাফি চমকের অপেক্ষা
অবিসংবাদিতভাবে মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকা। বল হাতে অনন্য এক ভরসার নাম মাশরাফি। তার পরশে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। কেবল বল হাতে নয় অধিনায়ত্বগুণে তাঁর মতো নেই দ্বিতীয়জন। ব্যাট হাতেও কম যান না এই ক্রিকেটার। অনেকবারই প্রতিপক্ষের বোলারদের শাসন করে বাংলাদেশকে নির্ভরতা দিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারে ১৭৫ ইনিংসে ১২ বার ম্যাচ সেরার পুরস্কার কিন্তু সেই কথাই বলছে। তবে ইংল্যান্ডকে পেলে মাশরাফির ব্যাট-বল যেন আরও ধারাল হয়ে ওঠে। ইংলিশদের বিপক্ষে ১২ ম্যাচ খেলে দুবার ম্যাচসেরা হয়েছেন ম্যাশ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের রূপকার কিন্তু এই মাশরাফি। ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার এক যুগ পার হলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটিতেও জয় ছিল না বাংলাদেশের। ২০১০ সালে সেই হতাশা ও আফসোস দূর করেন মাশরাফি। সেবার ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়ার পর প্রথম ওয়ানডেতেও বড় পরাজয়ের সাক্ষী হয় বাংলাদেশের। ব্রিস্টলে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে তাই বাংলাদেশের পক্ষে বাজি লাগানোর মতো মানুষ ছিল না। টস হেরে আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ডের সামনে ২৩৭ রানের লক্ষ্য রাখে বাংলাদেশ। টাইগারদের পক্ষে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। এ ছাড়া জহুরুল ইসলাম ৪০ ও মাহমুদউল্লাহ করেন ২৪ রান।
জবাবে দারুণ শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। তবে ইংলিশদের স্কোর ৫০ পেরোতেই জোড়া আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। এরপর ইংলিশ ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডখ্যাত ইয়ন মরগান ও পল কলিংউডকে ফিরিয়ে দেন আবদুর রাজ্জাক। তবে কাজের কাজটি করেন মাশরাফি। বল হাতে ম্যাশ ৮ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিলেও জয়ের পথে ভালোভাবেই টিকে ছিল ইংল্যান্ড। জয় থেকে কেবল ২৮ রান দূরে স্বাগতিকরা। বল রয়েছে ২৪টি। জনাথন ট্রট ও স্টুয়ার্ট ব্রড ভালোভাবেই উইকেটে জেকে বসেছেন। নবম ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে স্টুয়ার্ট ব্রডের উইকেটটা নেন ম্যাশ। শেষ ওভারে ট্রটের ব্যাটে দুটি চারের মার খেলেও জেমস অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের জয়ের কাজটা সহজ করে দেন মাশরাফি। শেষ ওভারে শফিউল ট্রটকে ফেরালে পাঁচ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। এর আগে ব্যাট হাতে ২৬ বলে ২২ রান করে বাংলাদেশের স্কোরটা ২৩৭ রানে নিয়ে যান মাশরাফি।
গত বছর ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড বধের নায়কও এই মাশরাফি। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬৯ রানেই সাত উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দারুণ ব্যাটিং করে স্কোরটা ২৩৮ রানে পৌঁছে দেন অধিনায়ক মাশরাফি। ২৯ বলে দুটি চার ও তিনটি ছয়ে ৪৪ রান করেন তিনি। সেদিন বল হাতে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন এই বোলার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন জেমস ভিঞ্চকে। এরপর তৃতীয় ওভারে জেসন রয়কে ফিরিয়ে ম্যাচের গতিপথটা বদলে দেন তিনি। পঞ্চম ওভারে বেন স্টোকসে আউট করে ম্যাচটো নিজেদের পক্ষে নিয়ে চলে আসেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে জ্যাক বলকে ফিরিয়ে দিয়ে ৩৪ রানে ম্যাচটা জিতিয়ে দেন মাশরাফি।
আজ আবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রিয় প্রতিপক্ষকে সামনে পেয়ে আবার জ্বলে উঠুন মাশরাফি। টাইগার সমর্থকদের এখন এটাই চাওয়া।