সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটিতে যত রেকর্ড
নিউজিল্যান্ডকে ২৬৫ রানে আটকে দেওয়ার পরও বাংলাদেশের জয় নিয়ে শঙ্কা ছিল। কারণ স্কোরে ৩৩ রান উঠতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে আসে প্রায় অর্ধেক দল। তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমানের মতো ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এরপর যেটা হলো সেটা গল্প-উপন্যাস-কল্পকাহিনী বা সিনেমার চেয়ে কম নয়। ২২৪ রানের অসাধারণ জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দারুণ জয়ের ম্যাচে দুর্দান্ত কিছু রেকর্ডেরও সঙ্গী হলেন এউ দুজন ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল ১৭৮ রান। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে এই রান করেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। এই ম্যাচে সেটা ছাড়িয়ে ২২৪ রানের মহাকাব্যিক এক জুটি গড়লেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। বলাইবাহুল্য, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটিই প্রথম দ্বিশতক রানের জুটি।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যে কোন উইকেট জুটিতে এটি দ্বিতীয় সবোর্চ্চ রানের জুটি। ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৫২ রান করেন রিকি পন্টিং ও শেন ওয়াটসন। গত রাতে ভারতের বিপক্ষে করা পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ ও শোয়েব মালিকের ২০৬ রানের জুটির রেকর্ডটা ভেঙে দেন সাকিব-রিয়াদ।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ দলের দ্বিতীয় সবোর্চ্চ রানের জুটি এটি। ১৯৯৯ সালে ভারতের হায়দরাবাদে শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়ের ৩৩১ রানের জুটিটা এখনও সবোর্চ্চ হয়ে আছে। তবে কার্ডিফের এ মাঠে যেকোনো দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ। ২০১১ সালে এখানে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৭০ রানের জুটি গড়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড় ও বিরাট কোহলি।
একই ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো দুই টাইগার ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি দেখল বাংলাদেশের ক্রিকেট। ২০১৫ সালে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম প্রথমবার এই রেকর্ড গড়েন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে এই দুজনের পাশে বসলেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে চতুর্থবার ঘটল এমন ঘটনা। সবার আগে ২০০২ সালে এমন কীর্তি গড়েন ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলী ও বীরেন্দর শেবাগ। ২০০৬ সালে এমন রেকর্ড গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেবার শতক করেন ডোয়াইন ব্রাভো ও ক্রিস গেইল। আর ২০০৯ সালে রিকি পন্টিং ও শেন ওয়াটসন তৃতীয়বারের মতো এমন গঠনার পুনরাবৃত্তি করেন। তিনবারই প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এমন কীর্তি গড়লেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
ইংল্যান্ডে যেকোনো দলের হয়ে পঞ্চম উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। ২০০০ সালে জিম্বাবুয়ের গ্রান্ট ফ্লাওয়ার ও মারে গুডউইন করেছিলেন ১৮৬ রান। ওয়ানডেতে পঞ্চম উইকটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২৫৬ রান করেন জেপি ডুমিনি ও ডেভিড মিলার। ওয়ানডেতে রান তাড়া করে জেতার ম্যাচে মাত্র দুই রানের জন্য বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারেননি সাকিব-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২০১৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৬ রানের জুটি গড়েন ইংল্যান্ডের রবি বোপারা ও ইয়ন মরগান।
২০১৫ সালে সর্বশেষ শতক করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেটিও এই কিউইদের বিপক্ষেই করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তাঁর সর্বশেষ তিনটি শতকই আইসিসি ইভেন্টে করলেন। বাংলাদেশের হয়ে কমপক্ষে ৫ ম্যাচ খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে জয়ের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের গড় সবচেয়ে বেশি। জয়ের ম্যাচে এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় ৫১.৬৭। হেরে যাওয়া ম্যাচে যেটি নেমে এসেছে ২৬.৮১ তে!