ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান
একে অপরের মুখোমুখি লড়াই দিয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিশন শুরু করেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ১২৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত। টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচে, শিরোপা জয়ের অন্তিম লড়াইয়েও মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। আর সেখানে আগের ম্যাচে হারের প্রতিশোধটা দারুণভাবেই নিয়েছে পাকিস্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ১৮০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো জিতে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা।
প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান জমা করেছিল ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ। জয়ের কাজটাও অনেকখানি এগিয়ে রেখেছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। ৩৩৯ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত পড়েছে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে। ১৯.৩ ওভার বাকি থাকতেই মাত্র ১৫৮ রানে গুটিয়ে গেছে ভারতের ইনিংস। ৪৩ বলে ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ভারতের পক্ষে প্রায় একাই লড়েছেন অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জয়ের অন্তিম লড়াইয়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। শুরুতে ব্যাটিং করে ব্যাটসম্যানরা গড়েছেন ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ। এরপর বল হাতেও চমক দেখান পাকিস্তান। মোহাম্মদ আমির, হাসান আলীদের দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ৭২ রান সংগ্রহ করতেই ভারত হারিয়েছিল ছয়টি উইকেট।
৩৩৯ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ আমির, হাসান আলীদের দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ৭২ রান সংগ্রহ করতেই ভারত হারিয়েছিল ছয়টি উইকেট। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরেছিলেনওপেনার রোহিত শর্মা। রানের খাতা না খুলেই মোহাম্মদ আমিরের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন রোহিত। নিজের পরের ওভারে আমির আউট করেছেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেও। মাত্র ৫ রান করে ফিরে গেছেন দারুণ ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যান। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সবচেয়ে বেশি রান করা শিখর ধাওয়ানও আজ বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি উইকেটে। নবম ওভারে ফিরে গেছেন ২১ রান করে। ১২ ও ১৩তম ওভারে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন ভারতের অন্যতম দুই ব্যাটিং ভরসা যুবরাজ সিং ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। কয়েক ওভার পরে কেদার যাদবও আউট হয়েছিলেন সাদাব খানের শিকার হয়ে।
সপ্তম উইকেটে ৮০ রানের ঝড়ো জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজা। কিন্তু ২৭তম ওভারে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে পান্ডিয়াকে। ৪৩ বলে ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফিরে গেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বাকি তিনটি উইকেট তুলে নিতে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পাকিস্তানকে। ৩০.৩ ওভার ব্যাটিং করেই ১৫৮ রানে গুটিয়ে গেছে ভারতের ইনিংস।
পাকিস্তানের পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন আমির ও হাসান আলি। দুজনেই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। দুটি উইকেট গেছে লেগস্পিনার সাদাব খানের ঝুলিতে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অবশ্য বড়সড় ধাক্কা খেতে বসেছিল পাকিস্তান। জাসপ্রিত বুমরাহর করা চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন ফখর জামান। এর পরই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তবে রিপ্লেতে দেখা যায়, বুমরাহর করা বলটি লাইনের বেশ বাইরে ছিল। ফলে একটি জীবন পেয়ে যান ফখর। সেই সুযোগটা ভালোমতোই কাজে লাগিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাঈদ আনোয়ার ও শোয়েব মালিকের পর পাকিস্তানের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করার বিরল কীর্তি গড়েছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। খেলেছেন ১০৬ বলে ১১৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৮ রান যোগ করে পাকিস্তানকে ভালো অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার ফখর জামান ও আজহার আলী। প্রথম উইকেটের দেখা পেতে ভারতকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৩তম ওভার পর্যন্ত। ৫৯ রান করে দুর্ভাগ্যবশত রানআউটের ফাঁদে পড়েন আজহার। ৩৪তম ওভারে পাকিস্তান পেয়েছে দ্বিতীয় সাফল্য। ১১৪ রান করে হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হয়েছেন ফখর। ততক্ষণে পাকিস্তান ছুঁয়ে ফেলেছে ২০০ রানের মাইলফলক। ৪০তম ওভারে ১২ রান করে ফিরে গেছেন শোয়েব মালিক। শেষপর্যায়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজের ৩৭ বলে ৫৭ ও ইমাদ ওয়াসিমের ২৫ রানের ঝড়ো দুটি ইনিংসে ভর করে স্কোরবোর্ডে ৩৩৮ রান জমা করে পাকিস্তান।