কোহলির ‘বিরাট’ প্রাপ্তি
এখনই দুজনের তুলনা করা হয়তো ‘ধৃষ্টতা’ হয়ে যাবে। তবে একটি লড়াইয়ে শচীন টেন্ডুলকারকে হারিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেন্ডুলকারের কোনো সেঞ্চুরি নেই। এত দিন ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানই এই কীর্তি গড়তে পারেননি। অ্যাডিলেডে দারুণ এক সেঞ্চুরি করে ভারতীয়দের সেই হাহাকার ঘুচিয়ে দিলেন কোহলি।
২০১৩ সালের নভেম্বরের কথা। টেন্ডুলকারের বিদায়ী টেস্ট নিয়ে গোটা ক্রিকেট-বিশ্ব আবেগাপ্লুত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলার সময় হোটেল রুমে কোহলিকে ডেকে পাঠালেন টেন্ডুলকার। দুজনের মধ্যে একান্তে কী কথা হয়েছিল এখন আর তা জানার উপায় নেই। হয়তো টেন্ডুলকার বলেছিলেন, ‘আমার বিদায়ে যে শূন্যতার জন্ম হচ্ছে তা পূরণের দায়িত্ব এখন থেকে তোমার।’ অথবা ‘ভারতকে এগিয়ে নেওয়ার গুরুভার নিতে হবে তোমাকে।’ ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যানের উপদেশ মেনে কোহলি স্বদেশকে কত দূর এগিয়ে নিতে পারবেন, এখনই তা বলা মুশকিল। তবে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করে নিজেকে পৌঁছে দিয়েছেন অন্য উচ্চতায়।
আরেকটি ‘রেকর্ড’ও গড়েছেন ভারতের সহ-অধিনায়ক। বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এত দিন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল সাঈদ আনোয়ারের, ১০১ রান। ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বাঁ-হাতি ওপেনারের সেই সেঞ্চুরিকে ম্লান করে দিয়ে টেন্ডুলকার খেলেছিলেন ৭৫ বলে ৯৮ রানের এক অসাধারণ ইনিংস। মাত্র দুই রানের জন্য ‘ম্যাজিক ফিগার’ স্পর্শ করতে পারেননি। তবে অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর মতে ওয়ানডের রেকর্ড ৪৯ সেঞ্চুরির মালিকের সেটা অন্যতম সেরা ইনিংস। যে ইনিংসের সুবাদে পাকিস্তানকে সহজেই ছয় উইকেটে হারিয়েছিল ভারত।
টেন্ডুলকার ও সাঈদ আনোয়ারকে পেছনে ফেলে কোহলি এখন বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক। ইদানীং ব্যাট হাতে সময়টা ভালো কাটছিল না। গত মাসে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে একটি ম্যাচেও দুই অঙ্কের ঘরে রান করতে পারেননি। রান পাননি বিশ্বকাপের দুটো প্রস্তুতি ম্যাচেও। শেষ পর্যন্ত জ্বলে উঠলেন এমন এক ম্যাচে, যাকে শুধু যুদ্ধের সঙ্গেই তুলনা করা যায়।