ধোনি-মিসবাহর ‘আনন্দ বেদনার কাব্য’
বিশ্বকাপ এই প্রথম দেখল শচীন টেন্ডুলকারবিহীন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। যে টেন্ডুলকার এর আগের পাঁচটি ম্যাচেই আবির্ভূত হয়েছিলেন পাকিস্তানের বিভীষিকা হিসেবে, তাঁর অনুপস্থিতি এবার নিশ্চিতভাবেই আশা জাগিয়েছিল পাকিস্তান শিবিরে। কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে হার যেন নিয়তিতে পরিণত হয়েছে পাকিস্তানের জন্য। টেন্ডুলকারের অভাব পূরণ করেছেন তাঁরই উত্তরসূরি বিরাট কোহলি।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ৭৬ রানের দারুণ জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ধোনি। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের পারফরম্যান্স খুবই ভালো। দলের ব্যাটিং নিয়ে আমি খুবই খুশি। বিরাট ও শিখর বড় একটা জুটি গড়েছে। আর তারপর রায়না সেটার সুবিধা খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে।’
অন্যদিকে বিশ্বকাপের আসরে ভারতের বিপক্ষে আরো একটি হারের দুঃসহ স্মৃতি দূরে সরিয়ে রাখতে চান পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। তবে ভারত যেসব জায়গায় ভালো খেলে জয় পেয়েছে, সেটা স্বীকার করেছেন নির্দ্বিধায়, ‘তারা খুবই ভালো খেলেছে। বড় সংগ্রহ গড়েছে, আর তারপর বোলিংও খুব ভালো করেছে।’ এই হারের হতাশা ভুলে সামনের ম্যাচগুলোতে ভালো করার প্রত্যয় জানিয়ে মিসবাহ বলেছেন, ‘এখন আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। এই ম্যাচটার কথা ভাবা যাবে না। মনোযোগ দিতে হবে পরবর্তী ম্যাচের দিকে।’
টেন্ডুলকারের অভাব এবার টের পেতে দেননি কোহলি। দুঃসময় পেছনে ফেলে জ্বলে উঠেছেন টেন্ডুলকারের ‘উত্তরসূরি’ এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১০৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে কোহলি এবার পাকিস্তান-বধের নায়ক। এর আগে ওয়ানডে ২১টি সেঞ্চুরি করলেও অ্যাডিলেড ওভালের ইনিংসকে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে বিবেচনা করছেন কোহলি। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘এটাই সম্ভবত আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। দারুণভাবে শুরু হলো আমাদের বিশ্বকাপ মিশন।’
কোহলি যে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন টেন্ডুলকার হয়ে উঠতে পারেন, তেমন কথা আগে অনেকের মুখে শোনা গেছে। সত্যিই কিংবদন্তিদের কাতারে যেতে পারবেন কিনা, সেটা অনেক দূরের ব্যাপার। কিন্তু রোববার একদিক দিয়ে টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে গেছেন কোহলি। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচটি ম্যাচ খেললেও কখনো সেঞ্চুরি করতে পারেননি ‘লিটল মাস্টার’। সেই ‘ম্যাজিক ফিগার’ কোহলি ছুঁয়ে ফেললেন দ্বিতীয় সুযোগেই। ২০১১ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র আট রান করলেও এবার তিনি এক চমৎকার সেঞ্চুরির নির্মাতা। টেন্ডুলকারের সঙ্গে তুলনায় কোনো চাপ অনুভব করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লাজুক হাসি দিয়ে কোহলি বলেছেন, ‘আমি মানুষের প্রত্যাশা পছন্দই করি। দেশের হয়ে ভালো খেললে প্রত্যাশা থাকবেই। আমি শুধু ভালো খেলতে চাই আর কিছুতেই হারতে চাই না। মনপ্রাণ উজাড় করে ব্যাট করার চেষ্টা করি।’