ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের চমক
ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে আয়ারল্যান্ডের আবির্ভাব আট বছর আগে। ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রিকেট-দুনিয়াকে চমকে দিয়েছিল আইরিশরা। গতবার ৩২৭ রান তাড়া করে হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। এবার তাদের ‘শিকার’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের ছুড়ে দেওয়া ৩০৫ রানের লক্ষ্য হেসে-খেলে ছুঁয়ে ফেলা আয়ারল্যান্ড জিতেছে চার উইকেটে, ২৫ বল হাতে রেখেই।
এবারের বিশ্বকাপে প্রথম চার ম্যাচেই আগে ব্যাট করা দল ৩০০ বা তার বেশি রান করেছে। ব্যতিক্রম হয়নি সোমবারও। পার্থক্য শুধু একটাই, আগের চার ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা দল সহজ জয় পেলেও ক্যারিবীয়রা পরাজয়ের বেদনায় নীল!
নেলসনে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮৭ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিত্রাতা দুজন—লেন্ডল সিমন্স ও ড্যারেন স্যামি। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের ১৫৪ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় প্রথম দুই বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা।
ওয়ানডেতে দ্বিতীয় এবং বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া সিমন্সের ব্যাট থেকে এসেছে ১০২ রান। ৮৪ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি সাজানো ৯টি চার ও পাঁচটি ছক্কায়।
১১ রানের জন্য সেঞ্চুরি না পেলেও স্যামির ইনিংস এক দুর্দান্ত কীর্তিতে ভাস্বর। তিন দশক ধরে টিকে থাকা একটি ‘রেকর্ড’ ভেঙে দেওয়ার কৃতিত্ব ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের। এত দিন বিশ্বকাপে ৭ নম্বর ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান ছিল পাকিস্তানের শহীদ মাহবুবের, ১৯৮৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৭। সেই ইনিংসকে পেছনে ফেলে স্যামি করেছেন ৮৯ রান। ৬৭ বলের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজানো ৯টি চার ও চারটি ছক্কায়।
শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেলের ১৩ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ‘ক্যামিও’ ইনিংস ক্যারিবীয়দের নিয়ে যায় ৩০০ রানের ওপরে।
আয়ারল্যান্ডকে আরেকটি স্মরণীয় জয় এনে দিয়েছেন পল স্টার্লিং, এড জয়েস ও নিয়াল ও’ব্রায়েন। অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের (২৩) সঙ্গে স্টার্লিংয়ের ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভালো সূচনা এনে দেয় আইরিশদের। দ্বিতীয় উইকেটে জয়েসকে নিয়ে ১০৬ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন স্টার্লিং।
মাত্র আট রানের জন্য ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পেতে ব্যর্থ স্টার্লিংয়ের ৮৪ বলে ৯২ রানের চমৎকার ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও তিনটি ছক্কা। ৬৭ বলে ১০টি চার ও দুটি ছক্কায় ৮৪ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলে ফিরে আসেন জয়েস।
তবে নিয়াল ও’ব্রায়েনকে আউট করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে দ্রুত চার উইকেট হারালেও লক্ষ্যের প্রতি অবিচল ছিলেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। ৬০ বলে ১১টি চারসহ অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ থেকে ফিরেছেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৫০ ওভারে ৩০৪/৭ (স্মিথ ১৮, গেইল ৩৬, ব্রাভো ০, স্যামুয়েলস ২১, রামদিন ১, সিমন্স ১০২, স্যামি ৮৯, রাসেল ২৭*, হোল্ডার ০*; ডকরেল ৩/৫০, মুনি ১/৫৯, কেভিন ও’ব্রায়েন ১/৭১)
আয়ারল্যান্ড : ৪৫.৫ ওভারে ৩০৭/৬ (পোর্টারফিল্ড ২৩, স্টার্লিং ৯২, জয়েস ৮৪, নিয়াল ও’ব্রায়েন ৭৯*, ব্যালবার্নি ৯, উইলসন ১, কেভিন ও’ব্রায়েন ০, মুনি ৬*; জেরম টেলর ৩/৭১, স্যামুয়েলস ১/২৫, গেইল ১/৪১)
ফল : আয়ারল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : পল স্টার্লিং